পাঠক! বাংলা ভাষায় সুবৃহৎ বিশুদ্ধ ইসলামী সাইটে আপনাকে স্বাগতম। সহীহ কুরআন, সুন্নাহনির্ভর রেফারেন্স ও গবেষণাধর্মী প্রায় ২০০এর অধিক বিষয়ের অনন্য সমাহার। আমাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও অনুদান দিয়ে সাহায্য করতে পড়ুন এখানে

কাদিয়ানি ও অন্যান্য কাফিরদের মধ্যে পার্থক্য কী?

কাদিয়ানীরা কাফের
আমাদের অনেক ভাই ও বোনের মাথায় এই প্রশ্ন আসে যে, কাদিয়ানি এবং অন্যান্য কাফিরদের মধ্যে পার্থক্য কী? কাদিয়ানিদের মধ্যে এমন কী বিশেষত্ব আছে, যার কারণে অন্য সকল কাফির দলের চাইতে তাদের বিষয়টা অধিক মন্দ ও ভয়াবহ?
যেখানে অন্যান্য কাফিরদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক মেলামেশা, প্রয়োজনীয় সম্পর্ক রাখা ও আর্থিক
লেনদেন করা বৈধ, সেখানে কাদিয়ানিদের সঙ্গে এসবের কোনো কিছুরই অনুমতি নেই।

পৃথিবীতে কাদিয়ানিরা ছাড়াও আরও অনেক কাফির সম্প্রদায়ের বসবাস রয়েছে। যেমন: ইহুদি, খ্রিষ্টান, হিন্দু ও শিখ প্রভৃতি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বিশেষভাবে এই কাদিয়ানিদের মোকাবিলা করার জন্য সারা বিশ্বে অনেক স্বতন্ত্র খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ পরিষদ এবং এ ধরনের আরও বিভিন্ন সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গ্লোবাল খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ পরিষদ নিজেদের ওপর এই দায়িত্ব অপরিহার্য করে নিয়েছে, যেখানে যেখানে কাদিয়ানিরা পৌঁছে গেছে, আল্লাহ তাআলার দীনের সাহায্য করার জন্য এবং মুসলমানদের সহযোগিতা করার জন্য তারা ঠিক যেখানে সেখানে পৌঁছে যাবে। এরপর তারা মুসলিম জনসাধারণের সামনে কাদিয়ানিদের মুখোশ উন্মোচন করবে। অন্যান্য কাফির সম্প্রদায়ের মোকাবিলা করার জন্য এরকম কোন বৈশ্বিক সংগঠন নেই।
ইমামুল আসর আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরি রহ, এবং পির মেহের আলি শাহ রহ. থেকে শুরু করে আমিরে শরিয়ত সায়্যিদ আতাউল্লাহ শাহ বুখারী রহ. পর্যন্ত এবং শাইখুল ইসলাম মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ বানুরি রহ. থেকে শুরু করে হজরত খাজা খান মুহাম্মাদ রহ. পর্যন্ত সব বিদগ্ধ আলিমরা এই কাদিয়ানি ফিতনা
দমনের ওপর অত্যন্ত গুরুত্বারোপপ করেছেন এবং তাদের জীবনের উল্লেখযোগ্য অংশ এই ফিতনা দমনের পেছনে ব্যয় করেছেন। জনসমক্ষে খুলে খুলে তাদের দাবিদাওয়ার অসারতা বয়ান করেছেন। এসবেরই বা কী কারণ! এককথায়, কাদিয়ানি এবং অন্যান্য কাফিরদের মধ্যে আদতে পার্থক্য কী?
অবশ্যই কাদিয়ানি এবং অন্যান্য কাফিরদের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্যের কারণেই অন্যান্য কাফিরদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক মেলামেশা করা ও প্রয়োজনীয় সম্পর্ক রাখার অনুমতি থাকলেও কাদিয়ানিদের ক্ষেত্রে এগুলোর কোনো কিছুই বৈধ নয়।
কাদিয়ানিরা মুরতাদ ও জিন্দিক। মুরতাদ বলা হয় সেই ব্যক্তিকে, যে ইসলাম ত্যাগ করে অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করে নেয়। আর জিন্দিক হলে ওই ব্যক্তি, যে নিজের কুফরি আকীদা-বিশ্বাসকে ইসলামের নামে চালায়। সুতরাং এজাতীয় ব্যক্তিরা হলে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী। পৃথিবীতে কোন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ কারীরা কোন ধরনের গুরুত্ব ও শিথিলতা প্রাপ্তির উপযুক্ততা রাখে না।
উপরন্তু যারা তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে, পৃথিবীর আইনে তারাও গ্রেফতার হওয়ার উপযুক্ত হয়ে যায়। কাদিয়ানিরাও যেহেতু জিন্দিক ও মুরতাদ, সুতরাং ইসলামী শিক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে তারা কোনো ধরনের গুরুত্ব বা শিথিলতা প্রাপ্তির উপযুক্ততা রাখে না।
রাসুলুল্লাহ ও ইহুদি-খ্রিস্টানদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছে, তাদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করেছেন; কিন্তু নবুওয়াতের দাবিদার (মুসায়লামা কাযযাব ও আসওয়াদ আনসি)-এর সঙ্গে সম্পর্ক রাখাকে শুধু নাজায়িয বলেই আখ্যায়িত করেননি; বরং সাহাবি ফায়রুজ দায়লামি রা.-এর দ্বারা আসওয়াদ আনসিকে হত্যা করিয়েছেন এবং মুসায়লামা কাযযাব আবু বকর সিদ্দিক রা. জাহান্নামে পৌঁছিয়েছে।।
অন্যান্য কাফিররা নিজেদের কুফর স্বীকার করে এবং নিজেদেরকে অমুসলিম বলে পরিচয় দেয়, নিজেদের মুসলমানদের থেকে আলাদা জাতি হিসেবে ঘোষণা করে। অপরদিকে কাদিয়ানিরা নিজেদের আকিদার ব্যাপারে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মুসলমানদের ধোঁকায় ফেলে এবং নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে উপস্থাপন করে। এই মাসআলা তাদের সবার জানা আছে যে, শরিয়তে মদপান নিষিদ্ধ। মদ পান করা, মদ তৈরি করা, মদ বিক্রি করা এ সবই হারাম কাজ। এটাও জানা আছে যে, শূকর হারাম।এবং সত্তাগতভাৰে নাপাক। শূকরের গোশত বিক্রয় করা, শূকরের লেনদেন করা,শুকরের কোনো অংশ খাওয়া বা পান করা অকাট্যভাবে হারাম। এখন এক ব্যক্তি মদবিক্রয় করছে, নিশ্চয়ই সে অপরাধী সাব্যস্ত হবে।
পক্ষান্তরে আরেক ব্যক্তি মদ শুধু বিক্রয় করছে না; বরং ওদের গায়ে জমজমের লেবেল লাগিয়ে তা বাজারজাত করছে, মানুষকে জমজমের নামে মদ খাওয়াচ্ছে। অপরাধী তাদের উক্ত দুজনই। কিন্তু এই দুই অপরাধীর মধ্যে পার্থক্য কী? এটা নিশ্চয়ই আপনাদের খুব ভালো করে জানা আছে।
বাজারে একজন ব্যক্তি শূকরের গোশতকে শূকরের গোশত বলেই বিক্রি করছে। সবাই ক্রয় করার আগেই স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছে, এটা কিন্তু শূকরের গোশত। যার ইচ্ছা কিনে নাও। আর যার ইচ্ছা নিয়ো না। নিশ্চয়ই এই ব্যক্তি শূকরের গোশত বিক্রয় করার অপরাধে অপরাধী। অপরদিকে আরেকজন ব্যক্তি শূকর ও কুকুরের গোশত বিক্রি করছে ছাগলের গোশত বলে। অপরাধী তাতে দুজনেই। কিন্তু উভয়ের অপরাধের মাত্রার আকাশ পাতাল তফাৎ রয়েছে। একজন হারাম জিনিস বিক্রি করছে হারাম নামেই, যেই নাম শুনলেও মুসলমানদের ঘৃণা আসে। অপরজন হারাম জিনিস বিক্রি করছে হালাল নামে, যে নাম শুনে সবাই ধোঁকা খেয়ে যায়, ছাগলের গোশত ভেবে বাসায় কিনে নিয়ে গিয়ে হালাল মনে করেই খায়। শূকরের গোশতকে শূকরের গোশত বলেই বিক্রয় করা আর একই গোশতকে ছাগল বা দুম্বার গোশত বলে চালানোর মধ্যে যে পার্থক্য, ইহুদি খ্রিষ্টান, হিন্দু শিখ প্রভৃতি গোষ্ঠী এবং কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের মধ্যেও একই পার্থক্য।
কুফর সর্বাবস্থায় কুফর। ইসলামের বিপরীত বিষয়। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য কাফেররা নিজেদের কুফরের ওপর ইসলামের লেবেল লাগায় না এবং মানুষের সামনে নিজেদের কুফরকে ইসলামের নামে উপস্থাপন করে না। কিন্তু কাদিয়ানিরা নিজেদের কুফরের ওপর ইসলামের লেবেল লাগায় এবং মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য বলে বেড়ায়,কাদিয়ানী ধর্মমত হলো প্রকৃত ইসলাম।

বই : কাদিয়ানি এবং অন্যান্য কাফিরদের মধ্যে পার্থক্য
রচয়িতা : আল্লামা ইউসুফ লুধিয়ানবি শহিদ রহ.
অনুবাদ : আলী হাসান উসামা
প্রকাশনায় : Daily Sunnah
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ২৪ পৃষ্ঠা
ফাইল সাইজ : মাত্র ৩৪৩ কেবি (এক এমবি'র তিন ভাগের এক ভাগ)
ডাউনলোড লিংক : https://mega.nz/

এরকম আরো লেখা পড়ুন-
আরো পড়ুনঃ তাওহীদের পরিচয়
আরো পড়ুনঃ আল্লাহর পরিচয়


একটি আবেদন


‘শান্তি ও মানবতার পথে’ শ্লোগানকে সামনে রেখে বাংলা ভাষায় অনলাইন রেডিও প্রতিষ্ঠাসহ মিডিয়ায় গবেষণা, প্রচার, দাওয়াহ প্রভৃতি কাজের আঞ্জাম দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে ‘সালাম মিডিয়া’। এজন্য বাৎসরিক প্রায় পাঁচলক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। আপনাদের সহযোগিতাই আমাদের পথচলার পাথেয়। আপনি প্রবাসী হলে মাসে অন্তত দশ ডলার বা বাৎসরিক হিসেবে দশ হাজার করে নূন্যতম হারে হলেও আমাদের এই অগ্রযাত্রায় শরীক হোন। 

আমাদের রয়েছে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবলশুধু নেই প্রয়োজনীয় অর্থবল। আপনার প্রতি এই আমাদের ছোট্ট আহবান। ০১৯২২৭৩০০০১ (তথ্য ও বিকাশ) বিস্তারিত পড়ুনঃ  আমাদের কথা
ছবিটি জুম করে দেখুন

No comments: