পাঠক! বাংলা ভাষায় সুবৃহৎ বিশুদ্ধ ইসলামী সাইটে আপনাকে স্বাগতম। সহীহ কুরআন, সুন্নাহনির্ভর রেফারেন্স ও গবেষণাধর্মী প্রায় ২০০এর অধিক বিষয়ের অনন্য সমাহার। আমাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও অনুদান দিয়ে সাহায্য করতে পড়ুন এখানে

তাওহীদ ‘একত্ববাদ’ কী ও কেন

তাওহীদ:

তাওহীদ হচ্ছে বান্দাকে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যে আল্লাহ তাআলা এক ও অদ্বিতীয়। রুবুবিয়্যাত (প্রভুত্ব), উলুহিয়্যাত (উপাস্যত্ব) এবং আসমা ও সিফাত (নির্ধারিত সত্ত্বাবাচক ও গুনবাচক নাম)-এর ক্ষেত্রে তাঁর কোন শরীক ও সমকক্ষ নেই।
বিশ্লেষণঃ
অর্থ্যাৎ বান্দাকে সুনিশ্চিতভাবে জানা ও স্বীকার করা , যে আল্লাহ তাআলা এককভাবে সকল বস্তুর মালিক ও প্রতিপালক। সকল কিছুর তিনিই সৃষ্টিকর্তা, সমগ্র বিশ্বকে তিনিই এককভাবে পরিচালনা করছেন, (তাই) একমাত্র তিনিই সকল ইবাদত- উপসনার উপযুক্ত, এতে তাঁর কোন শরীক ও অংশীদার নেই। তিনি ভিন্ন সকল উপাস্য বাতিল ও অসত্য। তিনি সর্বোতভাবে যাবতীয় পরিপূর্ণ গুণাবলী ও বৈশিষ্টে বৈশিষ্টমন্ডিত। সকল প্রকার দোষ ও অপূর্ণাঙ্গতা থেকে মুক্ত ও পবিত্র।
সকল সুন্দর নাম ও উচ্চ গুণাবলি তাঁর জন্যেই নির্দিষ্ট।

২- তাওহীদের প্রকারভেদ

সকল নবী-রাসূল মানুষদের যে তাওহীদের প্রতি দাওয়াত দিয়েছেন এবং যে তাওহীদ বিষয়ে সকল ঐশী গ্রন্থ অবতীর্ণ হয়েছে সেটি দুভাগে বিভক্ত। 
প্রথমঃ
আল্লাহকে জানা ও মানার ক্ষেত্রে তাঁর একত্ববাদ। এটাকে তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ ওয়াস সিফাত বলা যায়। অর্থ্যাৎ প্রভূত্ব, নাম ও গুণাবলির ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ।
এ একত্ববাদের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার অস্তিত্বকে প্রমাণ করা হয় এবং তাঁর নাম, সিফাত এবং কর্মাবলীর ক্ষেত্রে তাঁকে এক ও অদ্বিতীয় বলে প্রতিষ্ঠিত করা হয়।
বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করলে এভাবে বলা যায়। বান্দা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করবে এবং স্বীকৃতি দেবে যে এককভাবে আল্লাহ তাআলাই এ নিখিল বিশ্বের স্রষ্টা, মালিক এবং পালনকর্তা। তিনিই একে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি স্বীয় সত্ত্বা, নাম, গুণাবলি ও কর্মের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ। তিনি সর্বজ্ঞ, সবকিছু পরিবেষ্টন ও নিয়ন্ত্রণকারী। রাজত্ব তাঁরই হাতে। সকল কিছুর উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান। তাঁর রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম ও সুমহান গুণাবলি।
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
 কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন। 


দ্বিতীয়ঃ কর্ম ও উপাসনা-প্রার্থনার ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার একত্ববাদ

একে তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ ওয়াল ইবাদাহ বলা হয়। অর্থাৎ যাবতীয় ইবাদত-উপাসনা যেমন: দো, সালাত, ভয়, আশা ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলাকে এক বলে বিশ্বাস করা, মেনে নেয়া এবং সকল প্রকার  ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্যই নিরংকুশ করা।
একটু বিশ্লেষণে গিয়ে আমরা এভাবে বলতে পারি, বান্দাকে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস ও স্বীকার করা যে, একমাত্র আল্লাহ তাআলাই এককভাবে সমস্ত সৃষ্টির ইবাদত-উপাসনার অধিকার সংরক্ষণ করেন। সকল মাখলূকের উপাস্য হওয়ার অধিকার একমাত্র তাঁরই। তিনিই ইবাদতের উপযুক্ত, তিনি ভিন্ন অন্য কেউ এ অধিকার রাখে না বরং কেউ উপযুক্তও নয়। সুতরাং দো, সালাত, সাহায্য প্রার্থনা, তাওয়াক্কুল, ভয়, আশা, যবেহ ও মান্নতসহ যাবতীয় ইবাদতের যে কোন একটি ইবাদতও আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উদ্দেশ্যে সম্পাদন ও নিবেদন করা যাবে না। যে ব্যক্তি গায়রুল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি মাত্র ইবাদতও সম্পাদন-নিবেদন করবে শরীয়তের দৃষ্টিতে সে কাফের ও মুশরকি বলে বিবেচিত হবে। যেমন আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন:
وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آَخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِنْدَ رَبِّهِ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ
আর যে কেউ আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকে, তার কাছে যার কোন সনদ নেই। তার হিসাব তার পালনকর্তার নিকট। নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না। 
এই তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ কে-ই অধিকাংশ মানুষ অস্বীকার করেছে। আর তাই আল্লাহ তাআলা অসংখ্য নবী-রাসূল মানুষদের নিকট প্রেরণ করেছেন। তাঁরা এসে তাদেরকে এক আল্লাহর ইবাদত এবং তিনি ভিন্ন অন্যদের উপাসনা-বন্দনা পরিত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
(১) এরশাদ হচ্ছে:
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُولٍ إِلَّا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُونِ
আপনার পূর্বে আমি যে রাসূলই পাঠিয়েছি তাঁকে এ প্রত্যাদেশই প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং একমাত্র আমারই ইবাদত কর। 
(২) আরো এরশাদ হচ্ছে:
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ
আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এ মর্মে যে তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত থেকে দূরে থাক। 

তাওহীদের সার-নির্যাস:

পৃথিবীতে সঙ্ঘটিত ও সঙ্ঘটিতব্য সকল ঘটনা-অনুঘটনা একমাত্র আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেই এবং তাঁর ইশারাতেই হয়ে থাকে। এখানে অন্য কোন মাধ্যম ও কার্যকারণের ন্যূনতম ভূমিকা নেই। প্রত্যেক মানুষ সকল বিষয়কে উপরোক্ত বিশ্বাসের আলোকে বিচার করবে। এটিই হচ্ছে মূলত তাওহীদের সার কথা। সুতরাং ভাল-মন্দ, উপকার-ক্ষতি সবকিছু এক আল্লাহর পক্ষ থেকেই। এখানে অন্য কিছুর কোন দখল নেই। আর তাই একমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে, যে ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর একত্ববাদকে প্রতিষ্ঠিত করবে। তাঁর সাথে অন্য কারো ইবাদত-উপাসনা করবে না।

তাওহীদের ফলাফল

সর্বক্ষেত্রে এক আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা, মাখলূকের বিরুদ্ধে অভিযোগ-অনুযোগ, তাদেরকে তিরস্কার-ভর্ৎসনা পরিহার করা। আল্লাহ তাআলাকে ভালবাসা, তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাঁর সিদ্ধান্ত ও নির্দেশাবলী প্রসন্নচিত্তে মেনে নেয়া।
·        মানুষ তার সহজাত প্রকৃতি এবং এ নিখিল বিশ্বের প্রতি চিন্তা-গবেষণা, এর সাভাবিক কর্মকান্ড সুনিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালিত হওয়া ইত্যাদির প্রতি সজাগ দৃষ্টিপাত ও পর্যবেক্ষনের কারণে অতি সহজেই তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ কে স্বীকার করে নেয়। তবে শুধু মাত্র এটুকুন স্বীকারোক্তিই ঈমান বিল্লাহ তথা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং আযাব থেকে মুক্তির জন্যে যথেষ্ট নয়। এ স্বীকারোক্তিতো ইবলিসও দিয়েছিল। তাবত মুশরিকরাও আল্লাহকে রব বলে স্বীকার করে। তাসত্ত্বেও এ স্বীকৃতি তাদের কোন উপকারে আসেনি। কারণ তারা তাওহীদুল ইবাদাহ বা আল্লাহকে একমাত্র মাবূদ বলে স্বীকার করেনি। সুতরাং যে ব্যক্তি শুধুমাত্র তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহর স্বীকৃতি দেবে সে মুসলিম ও একত্ববাদী বলে স্বীকৃতি পাবে না এবং তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ তথা আল্লাহকে একমাত্র ইলাহ বলে স্বীকার করা পর্যন্ত তার জীবন ও সম্পদ নিরাপদ বলে বিবেচিত হবে না। তাকে অবশ্যই সাক্ষ্য দিতে হবে যে আল্লাহ তাআলা ব্যতীত সত্যিকার কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক-সমকক্ষ নেই, তিনিই সকল ইবাদতের একমাত্র উপযুক্ত। সাথে সাথে সকল এবাদতে নিজেকে যুক্ত করতে হবে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করা চলবে না।

তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ ও তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ ওতপ্রোতভাবে জড়িত, একটি ছাড়া অপরটিকে গ্রহণযোগ্য নয়।
(১)  তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ, তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ-কে আবশ্যক করে অর্থাৎ আল্লাহ তাআলাকে রব বলে মেনে নিলে ইলাহ (উপাস্য) বলেও মানতে হবে। সুতরাং যিনি একথা স্বীকার করবেন যে আল্লাহ তাআলাই একমাত্র প্রতিপালক, সৃষ্টিকর্তা, মালিক ও রিযিক দাতা। তাকে অবশ্যই এ কথাও মানতে হবে যে তাহলে আল্লাহ তাআলাই এককভাবে ইবাদতের উপযুক্ত। অতএব, বিপদাপদে একমাত্র তাঁকেই ডাকতে হবে। তাঁর নিকটই প্রার্থনা করতে হবে। তাঁর কাছেই ফরিয়াদ করতে হবে। তাঁর উপরই ভরসা করতে হবে। কোন একটি ইবাদতও তাঁকে ভিন্ন অন্য কারো দিকে ফিরানো যাবে না, অন্য কারো নিমিত্তে সম্পাদন করা যাবে না। অনুরূপভাবে তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ, তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহকে আবশ্যক করে সুতরাং যিনি একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত উপসনা করেন তাঁর সাথে কাউকে শরীক করেন না তাঁর ব্যাপারে অবশ্যই বলা যায় যে তিনি আল্লাহ তাআলাকে প্রতিপালক, স্রষ্টা ও মালিক বলেও বিশ্বাস করেন।
(২)  রুবুবিয়্যাহ ও উলূহিয়্যাহ যখন একত্রে উল্লেখিত হবে তখন উভয়ের অর্থ ভিন্ন ভিন্ন হবে।  রবের (الرب) অর্থ হবে মালিক, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনাকারী আর ইলাহ্  এর অর্থ হবে সত্যিকারের উপাস্য যিনি এককভাবে সকল ইবাদতের উপযুক্ত।
যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন-
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ﴿1﴾ مَلِكِ النَّاسِ ﴿2﴾ إِلَهِ النَّاسِ ﴿3﴾
 বলুন আমি আশ্রয় চাই মানুষের প্রতিপালকের নিকট, মানুষের মালিকের নিকট, মানুষের ইলাহ ও উপাস্যের নিকট।  
আবার কখনো কখনো শুধুমাত্র একটিকে উল্লেখ করে উভয় অর্থ বুঝানো হয়। অর্থাৎ রব বলে ইলাহ ও রব, আবার ইলাহ বলে রব ও ইলাহ। যেমন আল্লাহ তাআলার বাণী-
قُلْ أَغَيْرَ اللَّهِ أَبْغِي رَبًّا وَهُوَ رَبُّ كُلِّ شَيْءٍ (الأنعام:164)  
 আপনি বলুন, আমি কি আল্লাহ ব্যতীত অন্য ইলাহ খোঁজব, অথচ তিনিই সবকিছুর প্রতিপালক। 

তাওহীদের ফযীলত

(১) আল্লাহ তাআলা বলেন: 
الَّذِينَ آَمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ أُولَئِكَ لَهُمُ الْأَمْنُ وَهُمْ مُهْتَدُونَ ﴿82﴾
’’যারা ঈমান এনেছে এবং স্বীয় ঈমান ও বিশ্বাসকে যুলুমের (শিরক) সাথে মিশ্রিত করেনি তাদের জন্যেই রয়েছে শান্তি ও নিরাপত্তা এবং তাঁরই হিদায়াত প্রাপ্ত।‘‘

হাদীসের বাণী-
وعن عبادة بن الصامت رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : من شهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له , و أن محمدا عبده و رسوله , و أن عيسى عبد الله  ورسوله وكلمته ألقاها إلى مريم وروح منه والجنة حق والنار حق , أدخله الله الجنة على ما كان من العمل.    (متفق عليه)
‘‘সাহাবী উবাদা বিন সামেত রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে যে আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই তিনি এক তাঁর কোন শরীক নেই। মুহাম্মাদ সা. তাঁর বান্দা এবং রাসূল। ঈসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল, তাঁর কালেমা যা তিনি মারইয়াম কে প্রদান করেছেন এবং প্রদান করেছেন তাঁর পক্ষ থেকে রূহ। এবং আরো সাক্ষ্য দেবে জান্নাত সত্য এবং জাহান্নাম সত্য, আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন তাঁর আমল যা-ই থাকুক।’’

তাওহীদপন্থীদের পুরস্কার

(১) আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন: 
وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ كُلَّمَا رُزِقُوا مِنْهَا مِنْ ثَمَرَةٍ رِزْقًا ۙ قَالُوا هَٰذَا الَّذِي رُزِقْنَا مِنْ قَبْلُ ۖ وَأُتُوا بِهِ مُتَشَابِهًا ۖ وَلَهُمْ فِيهَا أَزْوَاجٌ مُطَهَّرَةٌ ۖ وَهُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
হে নবী! যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, আপনি তাদের এমন জান্নাতের  সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনই তারা খাবার হিসাবে কোন ফলপ্রাপ্ত হবে, তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম। বস্তুত: তাদেরকে একই সাদৃশ্যপূর্ণ ফল প্রদান করা হবে এবং সেখানে তাদের জন্যে শুদ্ধচারিনী (পূতপবিত্র) রমণীকূল থাকবে। তারা সেখানে অনন্তকাল অবস্থান করবে।
হাদীসের বাণী-
وعن جابر رضي الله عنه قال: أتى النبي صلى الله عليه وسلم رجل فقال : يا رسول الله  ما الموجبتان ؟ فقال : من مات لا يشرك بالله شيئا دخل الجنة , ومن مات يشرك بالله شيئا دخل النار . متفق عليه  
সাহাবী জাবের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী আকরাম সা. এর নিকট জনৈক ব্যক্তি এসে জানতে চাইলো ইয়া রাসূলাল্লাহ! অবধারিতকারী বিষয় দুটো কি? রাসূলুল্লাহ সা.  উত্তরে বললেন: যে ব্যক্তি এমতাবস্থায় মারা যাবে যে, আল্লাহর সাথে কোন (কিছুকে) শরীক করেনি, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে আল্লাহর সাথে শিরক করে মারা যাবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

কালেমায়ে তাওহীদের মহত্ব ও মর্যাদা

عن عبد الله  بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما أن رسول الله  صلى الله عليه وسلم قال: إن نبي الله  نوحا عليه السلام لما حضرته الوفاة  قال لابنه : إني قاصّ عليك الوصية : آمرك باثنتين و أنهاك عن اثنتين , آمرك بـ( لا إله إلا الله ) فإن السماوات السبع و الأرضين السبع لو وضعت في كفة ووضعت لا إله إلا الله في كفة, رجحت بهن لا إله إلا الله , ولو أن السماوات السبع, والأرضين السبع , كن حلقة مبهمة قصمتهن لا إله إلا الله , وسبحان الله وبحمده , فإنها صلاة كل شيء , وبها يرزق الخلق, وأنهاك عن الشرك والكبر... أخرجه أحمد والبخاري في الأدب المفرد.
সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রা.মা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন: আল্লাহর নবী নূহ আলাইহিস সালাম মৃত্যুমুখে পতিত হলে স্বীয় ছেলেকে অসিয়ত করে বললেন: আমি তোমাকে দুটো বিষয়ে আদেশ করছি এবং অন্য দু'টো সম্পর্কে নিষেধ করছি। আদেশ করছি- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ((لا إله إلا الله সম্পর্কে। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলাকে একমাত্র ইলাহ বলে মেনে নেবে। কারণ সাতটি আকাশ এবং সাতটি যমীনকে যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অন্য পাল্লায়, তাহলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ঐ সকল আকাশ যমীনকে নিয়ে ঝুলে পড়বে। আর সাত আকাশ ও সাত যমীন যদি পরস্পর শৃংখলাবদ্ধ থাকত। তাহলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ তাদের ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিত।
আর সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুল্লিাহ বেশী বেশী করে বলবে। কারণ এটি সকল বস্তুর সালাত ও তাসবীহ, এর মাধ্যমেই সৃষ্টিজীবকে রিযিক দেয়া হয়। আর নিষেধ করছি শিরক ও অহংকার থেকে...। 

তাওহীদের পূর্ণতা

বান্দার তাওহীদ ও একত্ববাদ তখনই পূর্ণতা লাভ করবে যখন সে কেবলমাত্র এক আল্লাহর ইবাদত করবে এবং সকল প্রকার তাগুতকে এড়িয়ে চলবে ।
যেমন আল্লাহ তাআলা বলেছেন :
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ

আমি সকল উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এ মর্মে যে তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাক, তাদের এড়িয়ে চল।

লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 

আরো পড়ুনঃ আল্লাহর পরিচয়

একটি আবেদন

বাংলা ভাষায় একটি শক্তিশালী ও মানসম্মত রেডিও প্রতিষ্ঠার প্ল্যান নিয়ে সালাম মিডিয়া কাজ করছে। আপনি একাজানি। আমরাও একানিজ নিজ জায়গা আমরা সবাই একা; কিন্তু সবাই মিলেও কী একা?
আমাদের রয়েছে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবলশুধু নেই প্রয়োজনীয় অর্থবল। তাই আপনি যদি একজন সচ্ছল মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে আপনার প্রতি আমাদের ছোট্ট আহ্বান। বিস্তারিত পড়ুনঃ  আমাদের কথা
ছবিটি জুম করে দেখুন