পাঠক! বাংলা ভাষায় সুবৃহৎ বিশুদ্ধ ইসলামী সাইটে আপনাকে স্বাগতম। সহীহ কুরআন, সুন্নাহনির্ভর রেফারেন্স ও গবেষণাধর্মী প্রায় ২০০এর অধিক বিষয়ের অনন্য সমাহার। আমাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও অনুদান দিয়ে সাহায্য করতে পড়ুন এখানে

জিহাদ উত্তম, নাকি ইলম অর্জন?

ইসলামিক রেডিও বাংলা
প্রশ্নঃ অনেককেই দেখা যায়, জিহাদের চেয়ে ইলমকে বেশি প্রাধান্য দেন। বলেন, আগে ইলম, পরে জিহাদ। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় জিহাদকে গৌন হিসেবে দেখা হয়। তারা পবিত্র কুরআন থেকে দলিলও দেন। বিশেষ করে যারা মাদ্রাসা মসজিদে দ্বীনী দরস তাদরীসের সাথে যুক্ত তারা জিহাদের চেয়ে ইলম অর্জনকে বড় চোখে দেখেন। মোটকথা, জিহাদ কি ইলম অর্জনের চেয়ে ছোট ইবাদত? এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআন-সুন্নাহ ও বিশুদ্ধ দলিলের আলোকে সমাধান জানতে চাই।

উত্তরঃ এ কথা স্বতঃসিদ্ধ যে, অন্য সমস্ত ইবাদাতের উপর জিহাদের মর্যাদা বেশি। কুরআন-সুন্নাহ ও সালাফ আসসালিহিনের আকওয়ালে এর ভূরি ভূরি প্রমাণ রয়েছে। মসজিদুল হারামের রক্ষণাবেক্ষণ, হাজিদের পানি পান করানো, মেহমানদারি... কুরআনে এসবের তুলনায় জিহাদকে শ্রেষ্ঠ আখ্যায়িত করা হয়েছে
أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ الْحَاجِّ وَعِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَجَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ لَا يَسْتَوُونَ عِندَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
তোমরা কি হাজিদের পানি পান করানো ও মসজিদুল হারাম আবাদকরণকে সেই লোকের সমান মনে কর, যে ইমান রাখে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি এবং যুদ্ধ করেছে আল্লাহর রাহে? আল্লাহর দৃষ্টিতে এরা মোটেই সমান নয়। আর আল্লাহ যালিম লোকদের হিদায়াত করেন না।[১]
ﻻَّ ﻳَﺴْﺘَﻮِﻯ ﭐﻟْﻘَﺎﻋِﺪُﻭﻥَ ﻣِﻦَ ﭐﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻏَﻴْﺮُ ﺃُﻭْﻟِﻰ ﭐﻟﻀَّﺮَﺭِ ﻭَﭐﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺪُﻭﻥَ ﻓِﻰ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻟِﻬِﻢْ ﻭَﺃَﻧْﻔُﺴِﻬِﻢْ ﻓَﻀَّﻞَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﭐﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺪِﻳﻦَ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻟِﻬِﻢْ ﻭَﺃَﻧْﻔُﺴِﻬِﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﭐﻟْﻘَﺎﻋِﺪِﻳﻦَ ﺩَﺭَﺟَﺔً ﻭَﻛُـﻼًّ ﻭَﻋَﺪَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﭐﻟْﺤُﺴْﻨَﻰٰ ﻭَﻓَﻀَّﻞَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﭐﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺪِﻳﻦَ ﻋَﻠَﻰ ﭐﻟْﻘَﺎﻋِﺪِﻳﻦَ ﺃَﺟْﺮﺍً ﻋَﻈِﻴﻤﺎً
বিনা কারণে যারা ঘরে বসে থাকে আর যারা আল্লাহর পথে নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করে, সমান নয় সেসব মুমিনরা। যারা স্বীয় জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করে, আল্লাহ তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন ঘরে বসে থাকা লোকদের ওপর। তবে প্রত্যেককেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহিদদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন ঘরে বসে থাকা লোকদের ওপর।[২]

আর হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুজাহিদকে উত্তম আখ্যা দিয়েছেন জিহাদ থেকে পেছনে থেকে ধারাবাহিকভাবে সিয়াম ও কিয়াম পালনকারী ব্যক্তির তুলনায়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قِيلَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَا يَعْدِلُ الْجِهَادَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ؟ قَالَ : لَا تَسْتَطِيعُونَهُ ، قَالَ : فَأَعَادُوا عَلَيْهِ مَرَّتَيْنِ ، أَوْ ثَلَاثًا كُلُّ ذَلِكَ يَقُولُ : لَا تَسْتَطِيعُونَهُ ، وَقَالَ فِي الثَّالِثَةِ : مَثَلُ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ الصَّائِمِ الْقَائِمِ الْقَانِتِ بِآيَاتِ اللَّهِ ، لَا يَفْتُرُ مِنْ صِيَامٍ، وَلَا صَلَاةٍ، حَتَّى يَرْجِعَ الْمُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ تَعَالَى
আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, জিহাদের সমতুল্য আর কোনো আমল আছে কি? নবি (সা.) বললেন, না, তোমরা এমন কিছুই করতে সক্ষম হবে না। পরপর আরও দুবার একই প্রশ্ন করা হলো। তিনিও একই জবাব দিলেন। তৃতীয়বারে বললেন, আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধে লিপ্ত ব্যক্তির তুলনা ওইরূপ রোযাদার, যে নামাযে দাঁড়িয়ে আল্লাহর আয়াত তিলাওয়াত করে যাচ্ছেযে তার রোযা ও নামায আদায়ে বিন্দুমাত্র ক্লান্তি প্রকাশ করে না; (সে এরূপ করতেই থাকে) যতক্ষণ না মুজাহিদ ফিরে আসে।[৩]
আবু সাইদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন। একবার একলোক এসে জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোন্ ব্যক্তি সর্বোত্তম? নবি (সা.) বললেন,
مُؤْمِنٌ يُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ
জান-মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী মুমিন।[৪]
ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন,
أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِخَيْرِ النَّاسِ؟ رَجُلٌ مُمْسِكٌ بِعِنَانِ فَرَسِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ.
আমি কি তোমাদেরকে সর্বোত্তম ব্যক্তিটি সম্পর্কে জানাবো না? (সেই ব্যক্তিটি হলো) স্বীয় ঘোড়ার লাগাম ধরে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ব্যক্তি।[৫]
আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ : دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ يَعْدِلُ الجِهَادَ ؟ قَالَ : لاَ أَجِدُهُ قَالَ : هَلْ تَسْتَطِيعُ إِذَا خَرَجَ المُجَاهِدُ أَنْ تَدْخُلَ مَسْجِدَكَ فَتَقُومَ وَلاَ تَفْتُرَ ، وَتَصُومَ وَلاَ تُفْطِرَ؟ قَالَ : وَمَنْ يَسْتَطِيعُ ذَلِكَ؟
একবার একলোক রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে জিহাদের সমতুল্য কোনো আমলের ব্যাপারে বলুন। নবি (সা.) বললেন, আমি জিহাদের সমতুল্য অন্য কোনো আমল পাচ্ছি না। আচ্ছা, তুমি কি এটা পারবেযখন একজন মুজাহিদ ঘর থেকে জিহাদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে তখন তুমি মসজিদে প্রবেশ করবে, (আর তার ফিরে আসার আগ পর্যন্ত) অবিরত সালাত আদায় করতে থাকবে, অবিরত সিয়াম পালন করতে থাকবে? লোকটি বলল, কে পারবে এমনটা? (কারও পক্ষেই তো সম্ভব নয়)[৬]

ইমামুস সুন্নাহ আহমাদ ইবনু হানবাল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
لَا نَعْلَمُ شَيْئًا مِنْ أَبْوَابِ الْبِرِّ أَفْضَلَ مِنْ السَّبِيلِ
জিহাদের চেয়ে উত্তম কোনো আমলের ব্যাপারে আমরা জানি না।[৭]
ফুযাইল ইবনু যিয়াদ বলেন,
سَمِعْت أَبَا عَبْدِ اللَّهِ، وَذُكِرَ لَهُ أَمْرُ الْعَدُوِّ فَجَعَلَ يَبْكِي، وَيَقُولُ: مَا مِنْ أَعْمَالِ الْبِرِّ أَفْضَلَ مِنْهُ.
আমি আহমাদ ইবনু হানবালকে বলতে শুনেছিতার সামনে জিহাদের ব্যাপারে আলোচনা ওঠলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, জিহাদের চেয়ে উত্তম কোনো আমল নেই।[৮]
ইমাম আহমাদ থেকে আরও বর্ণিত হয়েছেঃ
لَيْسَ يَعْدِلُ لِقَاءَ الْعَدُوِّ شَيْءٌ. وَمُبَاشَرَةُ الْقِتَالِ بِنَفْسِهِ أَفْضَلُ الْأَعْمَالِ، وَاَلَّذِينَ يُقَاتِلُونَ الْعَدُوَّ، هُمْ الَّذِينَ يَدْفَعُونَ عَنْ الْإِسْلَامِ وَعَنْ حَرِيمِهِمْ، فَأَيُّ عَمَلٍ أَفْضَلُ مِنْهُ
শত্রুর মোকাবিলা করার চেয়ে উত্তম আর কোনো আমল নেই। জিহাদের ময়দানে শত্রুর মোকাবিলায় যে ব্যক্তি সংগ্রামরত সে তো ইসলাম এবং ইসলামি পরিবার সংরক্ষণে নিয়োজিত। সুতরাং এর চেয়ে উত্তম কোনো আমল কীভাবে হবে?[৯]

এ জন্য ইমাম ইবনু কুদামাহ (রহ.) রচিত হানবালি ফিকহের প্রসিদ্ধ কিতাব আলমুগনিতে অধ্যায় রচনা করা হয়েছে এই শিরোনামে مَسْأَلَةٌ أَفْضَلُ الْأَعْمَالِ بَعْدَ الْفَرَائِضِ الْجِهَادُ মাসয়ালাহ : ফরযসমূহের পর জিহাদই হলো সর্বোত্তম আমল। ইমাম বুহুতি কাশফুল ক্বিনা গ্রন্থে এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, এখানে بَعْدَ الْفَرَائِضِ দ্বারা বোঝা যায় যে, এটা ফারদুল কিফায়ার ক্ষেত্রে। ইমামুস সুন্নাহ বলেন, لَا أَعْلَمُ شَيْئًا مِنْ الْعَمَلِ بَعْدَ الْفَرَائِضِ أَفْضَلَ مِنْ الْجِهَادِ ফরযসমূহের পর জিহাদের চেয়ে অন্য কোনো উত্তম আমলের ব্যাপারে আমি জানি না।[১০]
অর্থাৎ, জিহাদ যখন ফারদুল কিফায়া থাকে, তখনও অন্য সমস্ত ইবাদাতের চেয়ে জিহাদ উত্তম। আর যদি ফারদুল আইন হয়, তাহলে তো মাসয়ালা সবারই জানা। ইবনু তাইমিয়ার ভাষায় বলতে গেলে
فَالْعَدُوُّ الصَّائِلُ الَّذِي يُفْسِدُ الدِّينَ وَالدُّنْيَا، ولَا شَيْءَ أَوْجَبَ بَعْدَ الْإِيمَانِ مِنْ دَفْعِهِ
যখন কাফিররা ব্যাপকভাবে মুসলিমদের দীনি ও দুনিয়াবি ক্ষয়ক্ষতিতে উন্মত্ত হয়ে ওঠে, তখন ইমান আনার পর তাদেরকে প্রতিহত করার চেয়ে অধিক গুরুত্ববহ আর কোনো আমল নেই।[১১]

মোটকথা জিহাদ সর্বাবস্থায়ই উত্তম আমল। ফারায়িদের মধ্যেও উত্তম, তাতাওয়ুর মধ্যেও উত্তম। বিভিন্ন হাদিসে সালাত বা হজকে উত্তম আমল বলা হয়েছে। হাঁ, অবশ্যই এগুলো উত্তম আমল। একে অপরের সম্পূরক। বিপরীত নয়। কিন্তু এসবগুলোর মধ্যেও জিহাদ সর্বশ্রেষ্ঠ। একজন ব্যক্তি জিহাদের ময়দানে দুনিয়াকে পিছনে ফেলে আসা হকপন্থী অসংখ্য আলিমের সোহবতে ইলম অর্জনের ব্যাপক সুযোগ পান। ফলে একজন মুজাহিদ জিহাদের পাশাপাশি ইলমচর্চার ফযিলতও লাভ করেন। সিয়াম, কিয়াম, তাসবিহ, তাহলিলেরও প্রচুর সুযোগ পান। কিন্তু ঘরে বসে থেকে ইলমচর্চাকারী, সিয়াম-কিয়াম পালনকারী ব্যক্তি জিহাদের সীমাহীন ফযিলত থেকে মাহরুম হন। তাই সর্বাবস্থায় জিহাদই উত্তম। জিহাদই সর্বোচ্চ আমল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
رأسُ الأمرِ الإسلامُ، وعمودُهُ الصَّلاةُ، وذروةُ سَنامِهِ الجِهادُ
সব কিছুর মূল হলো ইসলাম, সালাত হলো তার খুঁটি, আর জিহাদ এর সর্বোচ্চ চূড়া।[১২]

ইলম অর্জনের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিটি ইবাদাতের পূর্বে ইলম প্রয়োজন।العلم قبل القول والعملজিহাদের জন্যও ইলম দরকার। এ জন্য আমাদের মাশায়েখরা প্রতিটি জিহাদপ্রেমীর জন্য পর্যাপ্ত ইলম অর্জনকে বাধ্যতামূলক মনে করেন। যে জিহাদ ইলমহীন, স্রেফ ইমোশনের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, দিনশেষে তা ফিতনায় পর্যবসিত হয়। আবার যে ইলম জিহাদের মর্যাদা ভূলন্ঠনে ব্যবহৃত হয়, তা তো কোনো ইলমই নয়, ফিতনার অন্ধকার। এ জন্য আপনি দেখবেন, উম্মাহর ইতিহাসে আহলুল ইলমরাই জিহাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ইবনুল মুবারক থেকে ইবনু তাইমিয়ার মতো জাদরেল মুহাদ্দিস ও মুফাক্কিহরা মাড়িয়ে বেড়িয়েছেন ময়দানের পর ময়দান। আজ অবধি তারই ধারাবাহিকতা চলছে।

তাওহিদের যোদ্ধাদের পক্ষে বলা ও লেখার মাধ্যমে তাদের পক্ষাবলম্বন করা ইলমের দাবি। এ জন্য তাগুত ও যালিম শাসকের পরোয়া না করাই হকপন্থি আলিমের শান। আর এই ইলমধারী আলিম উত্তম। যে ইলম তাওহিদের সৈনিকদের পরিত্যাগ করে, হক বলায় শাসকের আদেশের অপেক্ষায় থাকে, সে ইলম ফায়দাজনক নয়, আর সে আলিম অনুসরণীয়ও নয়। যে ইলম তাওহিদের সৈনিকদের পক্ষে ভূমিকা রাখে না, যে আলিমকে হাজারো ওযর দিতে হয়, আর যাহোক তারা উম্মাহর অনুসরণীয় আদর্শ নয়। ইমাম আহমাদ, ইমাম আবু হানিফা এমন হকপন্থি উলামা, যারা নিজে জিহাদে শরিক না থাকলেও জিহাদ ও মুজাহিদদের পক্ষে বলেছেন, নুসরত করেছেন। ইমাম আবু হানিফা তো এজন্য কারাবরণই করেছেন। তাওহিদ শ্রেষ্ঠ আমল, জিহাদ হলো তাওহিদ বাস্তবায়নের আমল। আলিমরা যদি এই তাওহিদের পক্ষেই না থাকেন, তাওহিদের যোদ্ধাদের পক্ষেই না থাকেন, তো এটা কী ধরনের ইলমর্জন! তাওহিদ ও তাওহিদের যোদ্ধাদের জন্যই যদি এ ইলম কাজে না আসে, তাহলে এই ইলমচর্চা তো স্রেফ সময়ের অপচয়।

সুতরাং জিহাদ জিহাদ করে ইলমচর্চায় অমনযোগী হওয়া যাবে না, আবার ইলম ইলম করে জিহাদও বর্জন করা যাবে না। কিতাব হবে পথপ্রদর্শক, তরবারি তার সাহায্যকারী। আর জিহাদের ময়দান তো হলো অর্জিত ইলমকে আমলে পরিণত করার সর্বোত্তম ক্ষেত্র।
——————————————————

[১] সুরা তাওবাহ৯: ১৯
[
২] সুরা নিসা৪: ৯৫
[
৩] সহিহ মুসলিমকিতাবুল ইমারাহ: ৩৬০১
[
৪] সহিহ মুসলিমকিতাবুল ইমারাহ: ১৮৮৮
[
৫] সুনানুত তিরমিযিআবওয়াবু ফাযায়িলিল জিহাদ: ১৬৫২
[
৬] সহিহ বুখারিকিতাবুল জিহাদ: ২৬৫৮
[
৭] ইবনু কুদামাহআলমুগনি৯/১৯৯
[
৮] প্রাগুক্ত
[
৯] প্রাগুক্ত
[
১০] প্রাগুক্ত
[
১১] ফাতাওয়া আলকুবরা৫/৫৩৭
[
১২] সুনানুত তিরমিযিহাদিস নং-২৬১৬


এরকম আরো লেখা পড়ুন-

আরো পড়ুনঃ যৌন তাড়নার সমস্যা ও এর সমাধান

No comments: