এক- নরম হৃদয়ের অধিকারী হওয়াঃ
যাদের হৃদয় নরম হবে, কোমল ও সুন্দর মেজাজের অধিকারী হবে, সর্বদা আল্লাহভীরূ হয়, কারো কোনো ক্ষতি করবে না, ধৈর্যশীল এমন লোক জান্নাতী হবে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: « يَدْخُلُ الْجَنَّةَ أَقْوَامٌ أَفْئِدَتُهُمْ مِثْلُ أَفْئِدَةِ الطَّيْرِ»
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: সা. বলেছেন: “জান্নাতে প্রবেশ করবে এমন ব্যক্তি যাদের অন্তরসমূহ হবে
পাখির অন্তরের ন্যায়[1]”।
দুই- দুর্বল অসহায় হওয়াঃ
জান্নাতে গরীব-মিসকিন, ফকির, পরমুখাপেক্ষী, দুর্বল লোকদের সংখ্যাধিক্য হবে। পক্ষান্তরে যারা তাদের বিপরীত হবে, অর্থাৎ অহংকারী, দুশ্চরিত্র ও ঝগড়াটে ব্যক্তি তারা জাহান্নামে যাবে।
عَنْ حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ رضى الله عنه سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَال:
«أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ الْجَنَّةِ؟ قَالُوا بَلَى قَالَ صلى الله عليه وسلم كُلُّ ضَعِيفٍ مُتَضَعِّفٍ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهُ لَأَبَرَّهُ ثُمَّ قَالَ أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ النَّارِ؟ قَالُوا بَلَى قَالَ كُلُّ عُتُلٍّ جَوَّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ»
“হারেসা ইবনে ওহাব রা. নবী সা.কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন: “আমি কি
তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের গুণাবলীর কথা বলবো না?” সাহাবাগণ বললেন:
জি হ্যাঁ বলুন। তিনি বললেন: “প্রত্যেক দুর্বল, মানুষের চোখে তুচ্ছ বা হেয়, কিন্তু সে যদি
কোনো বিষয়ে আল্লাহর নামে কসম করে তাহলে আল্লাহ তার কসম পূর্ণ করবেন।” অতঃপর তিনি
বললেন: আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামী লোকদের কথা বলবো না? তারা বললেন: জ্বি হ্যাঁ বলুন। তিনি বললেন: “প্রত্যেক
ঝগড়াকারী,
দুশ্চরিত্র ও অহংকারী ব্যক্তি[2]।”
তিন- নম্র-ভদ্র ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবেঃ
নম্র-ভদ্র, মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য ও মানুষের কাছের লোক- যাকে
মানুষ বিপদ আপদে কাছে পায়- এমন খোশ মেজাজ, পরিচিত ও ভাল লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ ধরনের লোকের জন্য আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামকে হারাম করে দিয়েছেন।
عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم قَالَ:«حُرِّمَ عَلَى النَّارِ كُلُّ هَيِّنٍ لَيِّنٍ سَهْلٍ قَرِيبٍ مِنْ النَّاسِ»
“ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক নরম দিল
ভদ্র এবং মানুষের সাথে মিশুক লোকদের জন্য জাহান্নাম হারাম”। যাদের জন্য
জাহান্নাম হারাম তারা অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে[3]।
চার- সা. এর
অনুসরণকারী জান্নাতে যাবেঃ
যে ব্যক্তি রাসূল সা.কেঅনুসরণ করবে, সে জান্নাতে যাবে। পক্ষান্তরে যে রা. এর
অনুসরণ করবে না সে জাহান্নামে যাবে। সুতরাং, সা. এর অনুসরণ করার দ্বারাই জান্নাতে প্রবেশ করা
নিহিত। হাদীস-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم قَالَ:
«كُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ إِلَّا مَنْ أَبَى قَالُوا يَا رَسُولَ اللهُ وَمَنْ يَأْبَى قَالَ مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ أَبَى
»
“আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- আমার সমস্ত
উম্মত জান্নাতে যাবে তবে ঐ সমস্ত লোক ব্যতীত যারা অস্বীকার করে। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করল হে আল্লাহর রাসূল! কে অস্বীকার করে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি
আমার অনুসরণ করে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার নাফরমানী করে সে অস্বীকার করে[4]।”
পাঁচ- দৈনিক বারো রাকাত সালাত আদায়কারীঃ
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে যে ব্যক্তি প্রতি দিন বারো রাকাআত সালাত
(ফজরের পূর্বে দুই রাকাআত, যোহরের পূর্বে চার রাকাআত, পরে দুই রাকাআত, মাগরিবের পরে দুই রাকাআত, এশার পরে দুই রাকাআত সুন্নত) আদায় করে সে জান্নাতে যাবে। হাদীস:
عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ رضي الله عنها زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهَا قَالَتْ:
سَمِعْتُ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ:
«مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يُصَلِّي لِلهِ كُلَّ يَوْمٍ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً تَطَوُّعًا غَيْرَ فَرِيضَةٍ إِلَّا بَنَى اللهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ»
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু
‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন- “যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে প্রতিদিন ফরয ব্যতীত বারো রাকাআত নফল
সালাত আদায় করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন[5]।”
ছয়-আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী
ব্যক্তি জান্নাতে যাবেঃ
যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদতে তার সাথে কাউকে শরীক করবে না,
সালাত কায়েম করবে, যাকাত করবে এবং আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখবে সে জান্নাতে প্রবেশ
করবে।
عَنْ أَبِي أَيُّوبَ رضى الله عنه قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ أَعْمَلُهُ يُدْنِينِي مِنْ الْجَنَّةِ وَيُبَاعِدُنِي مِنْ النَّارِ قَالَ:
«تَعْبُدُ اللهَ لَا تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا وَتُقِيمُ الصَّلَاةَ وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ وَتَصِلُ ذَا رَحِمِكَ فَلَمَّا أَدْبَرَ قَالَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم إِنْ تَمَسَّكَ بِمَا أُمِرَ بِهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ»
“আবূ আয়্যুব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: এক ব্যক্তি
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল: হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কোনো আমলের কথা বলুন যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে।
তিনি বললেন: আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করবে না। সালাত
কায়েম কর,
যাকাত আদায় কর, আর আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ। যখন ঐ লোক ফিরে যেতে লাগল, তখন রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তাকে যা করতে বলা হল, যদি সে এর ওপর
আমল করে তাহলে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে[6]।
সাত-তাহাজ্জুদ আদায়কারী, রোজা পালনকারী ও
অন্যকে খাদ্য দানকারীঃ
মনে রাখবে, চরিত্রবান, তাহাজ্জুদগুজার, অধিক পরিমাণে
নফল রোযা আদায়কারী ও অন্যকে খাদ্য দানকারী জান্নাতে যাবে। এ ধরনের লোকদের জন্য জান্নাতে বিশেষ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। হাদীস-
عَنْ عَلِيٍّ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَغُرَفًا تُرَى ظُهُورُهَا مِنْ بُطُونِهَا وَبُطُونُهَا مِنْ ظُهُورِهَا فَقَامَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ لِمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللهُ؟ قَالَ هي لِمَنْ أَطَابَ الْكَلَامَ وَأَطْعَمَ الطَّعَامَ وَأَدَامَ الصِّيَامَ وَصَلَّى لِلهِ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ»
“আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন: জান্নাতে এমন কিছু ঘর আছে যার ভিতর থেকে বাহিরের সব কিছু দেখা
যাবে। আবার বাহির থেকে ভিতরের সব কিছু দেখা যাবে। এক বেদুইন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া
রাসূলুল্লাহ! ঐ ঘর কার জন্য? তিনি বললেন: ঐ
ব্যক্তির জন্য যে ভাল ও নরম কথা বলে, অন্যকে আহার করায়, অধিক পরিমাণে
নফল রোযা রাখে, আর যখন লোকেরা আরামে নিদ্রারত
থাকে তখন উঠে সে সালাত আদায় করে[7]।”
আট- ন্যায় পরায়ণ বাদশাহ জান্নাতে
যাবেঃ
ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ, অপরের প্রতি
অনুগ্রহকারী, নরম অন্তর, কারো নিকট কোন কিছু চায় না এমন ব্যক্তিও জান্নাতে যাবে।
عَنْ عِيَاضِ بْنِ حِمَارٍ الْمُجَاشِعِيِّ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم قال:
«ذَاتَ يَوْمٍ فِي خُطْبَتِهِ وَأَهْلُ الْجَنَّةِ ثَلَاثَةٌ ذُو سُلْطَانٍ مُقْسِطٌ مُتَصَدِّقٌ مُوَفَّقٌ وَرَجُلٌ رَحِيمٌ رَقِيقُ الْقَلْبِ لِكُلِّ ذِي قُرْبَى وَمُسْلِمٍ وَعَفِيفٌ مُتَعَفِّفٌ ذُو عِيَالٍ»
“ইয়াদ্ব ইবন হিমার মাজাশে‘য়ী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তিন প্রকারের লোক জান্নাতে যাবে। এক- ন্যায়পরায়ণ
বাদশাহ,
সত্যবাদী, নেক আমলকারী। দুই- ঐ ব্যক্তি যে
প্রত্যেক আত্মীয়ের সাথে এবং প্রত্যেক মুসলমানের সাথে দয়া করে। তিন-ঐ ব্যক্তি যে
লজ্জা স্থানকে সংরক্ষণ করে এবং বিনা প্রয়োজনে কারো নিকট কোন কিছু চায় না[8]।
যদি রাজা বাদশার ন্যায় বিচার করে, তাহলে
তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যদি অন্যায় করে, তাহলে তাদের জন্য জাহান্নাম
অবধারিত। সুতরাং ক্ষমতাশীলদের প্রতি দাওয়াত থাকল, তারা যেন প্রজাদের প্রতি কোন
প্রকার অন্যায়-অনাচার ও জুলুম অত্যাচার না করে।
আত্মীয় স্বজনদের সাথে ভালো ব্যবহার করা একটি মহৎ গুণ। কিন্তু দুঃখের
বিষয় বর্তমানে আমরা আত্মীয় স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকি। আত্মীয় স্বজনদের খোঁজ খবর নেই না।
মানুষের কাছে হাত না পাতা যথাসাধ্য উচিত। বর্তমানে দেখা
যায় ভিক্ষাবৃত্তি একটি পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাদের অভাব তারাও চায় আবার যাদের অভাব
নাই তারাও চায়। কিন্তু তারপরও কিছু লোক আছে, যারা মানুষের কাছে হাত পাতে না। আত্মসম্মানবোধের
কারণে মানুষের কাছে অযথা ধরণা দেন না তারা। তবে এমন ব্যক্তিদের দান সদকা করা বিশেষ
ফজিলতের ও ধনীদের উচিত খুঁজে খুঁজে এমন ব্যক্তিদেরই সাহায্য করা।
নয়- আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল এবং দ্বীনের
প্রতি সন্তুষ্টি জ্ঞাপনঃ
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনায় আনন্দ অনুভবকারী, ইসলামকে সন্তুষ্ট চিত্তে স্বীয় দ্বীন হিসেবে বিশ্বাসকারীও
জান্নাতে যাবে।
عَنْ اَبِيْ سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم قَالَ:
«مَنْ قَالَ رَضِيتُ بِاللهُ رَبًّا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ»
“আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি বলে যে আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে নবী হিসেবে পেয়ে আমি সন্তুষ্ট। তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে[9]।
দশ:- দুই বা দুইয়ের অধিক কন্যাকে লালন-পালন করাঃ
দুই বা দুইয়ের অধিক কন্যাকে লালন-পালন করে সু-শিক্ষা দানকারী এবং
বালেগা হওয়ার পর তাদেরকে সু-পাত্রে পাত্রস্থকারী ব্যক্তিও জান্নাতী হবে। হাদীস-
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم: «مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَا وَهُوَ وَضَمَّ أَصَابِعَهُ
»
“আনাস ইবন মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি দুইজন কন্যাকে তাদের প্রাপ্তবয়স্কা হওয়া
পর্যন্ত লালন-পালন করল, কিয়ামতের দিন আমি ও ঐ ব্যক্তি এভাবে
একত্রে উপস্থিত হব। একথা বলে তিনি তাঁর দুই আঙ্গুলকে একত্রিত করে দেখালেন (যে
এভাবে)[10]।
এগার- ওযুর পর দুই রাকাআত নফল সালাত (তাহিয়্যাতুল ওযু) রীতিমত
আদায়কারীও জান্নাতী হবেঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِبِلَالٍ عِنْدَ صَلَاةِ الْغَدَاةِ «يَا بِلَالُ حَدِّثْنِي بِأَرْجَى عَمَلٍ عَمِلْتَهُ فِي الْإِسْلَامِ منفعة فاني فَإِنِّي سَمِعْتُ اللليلة خشف نَعْلَيْكَ بَيْنَ يَدَيَّ فِي الْجَنَّةِ
» قَالَ بلال مَا عَمِلْتُ عَمَلًا أَرْجَى عِنْدِي منفعة من أَنِّي لَمْ أَتَطَهَّرْ طَهُورًا تَامًّا فِي سَاعَةِ مِنْ لَيْلٍ أَوْ نَهَارٍ إِلَّا صَلَّيْتُ بِذَلِكَ الطُّهُورِ مَا كُتِبَ لِي أَنْ أُصَلِّيَ
“আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল সা. একদিন
ফজরের নামাযের পর বেলাল রা.কে জিজ্ঞেস করলেন, হে বেলাল! ইসলাম গ্রহণের পর তোমার এমন কি আমল আছে যার বিনিময়ে তুমি পুরস্কৃত
হওয়ার আশা রাখ? কেননা আজ রাতে আমি জান্নাতে আমার
সামনে তোমার চলার শব্দ পেয়েছি। বেলাল রা. বললেন: আমি এর চেয়ে অধিক কোন আমল তো
দেখছি না যে, দিনে বা রাতে যখনই আমি ওযু করি
তখনই যতটুকু আল্লাহ তাওফিক দেন ততটুকু নফল সালাত আমি আদায় করি[11]। অপর একটি হাদিসে বর্ণিত-
عن عقبة بن عامر رضى الله عنه قال كانت علينا رعاية الإبل فجاءت نوبتي فروحتها بعشي فأدركت رسول الله صلى الله عليه وسلم قائما يحدث الناس فأدركت من قوله «
ما من مسلم يتوصأ فيحسن وضوءه ثم يقوم فيصلى ركعتين مقبل عليهما بقلبه و وجهه إلا وجبت له الجنة »
“উকবা ইবনে
আমের রা. হতে বর্ণিত, আমাদের উপর দায়িত্ব ছিল উট চরাবার। যখন আমার পালা আসল তখন
আমি এক বিকালে সেগুলো ছেড়ে আসলাম। তখন আমি রাসূল সা. দেখলাম যে তিনি মানুষদের নিয়ে
কথা বলছেন, তখন তার যে কথা আমি ধারণ করতে পেরেছি তার মধ্যে ছিল, “তোমাদের যে
কেউ ওযু করল, আর সে তার ওযু সুন্দর করে সম্পন্ন করে, তারপর দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল
অজুর দুই রাকাত সালাত ভালোভাবে আদায় করল, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে[12]।”
বার- যে নারীর মধ্যে হাদিস বর্ণিত পাঁচটি গুণ পাওয়া যাবেঃ
এক-যে নারী সময় মত যথাযথ সালাত আদায় করে।
দুই- যে নারী তার স্বামীর অনুগত স্ত্রী হয়। তিন- যে নারী রমযান মাসের রোজা পালন করে। চার-যে নারী
তার লজ্জা-স্থানের হেফাজত করে। সে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قال:
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا ، وَصَامَتْ شَهْرَهَا ، وَحَصَنَتْ فَرْجَهَا ، وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا قِيْلَ لَهَا اَدْخُلِيْ الْجَنَّةَ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شِئْتِ»
“আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: সা. বলেছেন: যে মহিলা
পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, রমযান মাসে রোযা
রাখে,
স্বীয় লজ্জা-স্থান সংরক্ষণ করে, স্বীয় স্বামীর অনুগত থাকে, কিয়ামতের দিন তাকে বলা হবে যে, জান্নাতের যে দরজা দিয়ে খুশি তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর[13]।
তেরো- শহীদ, নবজাত শিশু ও জীবন্ত প্রোথিত
সন্তানঃ
আম্বিয়া, শহীদ, মৃত্যুবরণকারী ঈমানদারদের নবজাতক শিশু এবং জীবন্ত প্রোথিত
সন্তান (জাহিলিয়াতের যুগে যা করা হত) তারা জান্নাতী হবে।
حَسْنَاءُ بِنْتُ مُعَاوِيَةَ رضي الله عنها قَالَتْ حَدَّثَنَا عَمِّي قَالَ قُلْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَنْ فِي الْجَنَّةِ؟ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم :«وَالشَّهِيدُ فِي الْجَنَّةِ وَالْمَوْلُودُ فِي الْجَنَّةِ وَالْوَئِيدُ فِي الْجَنَّةِ»
“হাসনা বিনতে মুয়াবিয়া রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমাকে আমার চাচা এ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: আমি
রাসূলুল্লাহ্ সা. জিজ্ঞেস করেছি যে, কোন ধরনের লোকেরা জান্নাতী হবে? তিনি বললেন: শহীদরা জান্নাতী। মৃত্যুবরণকারী নবজাতক শিশু জান্নাতী। (জাহিলিয়াতের
যুগে) জীবন্ত প্রোথিত শিশু জান্নাতী[14]।”
চৌদ্দ-আল্লাহর পথের যোদ্ধাঃ
আল্লাহর পথে জিহাদকারী জান্নাতী হবে। আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে শহীদ হলে, সে অবশ্যই জান্নাতী। হাদীস-
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رضى الله عنه عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ:«مَنْ قَاتَلَ فِي سَبِيلِ اللهُ مِنْ رَجُلٍ مُسْلِمٍ فُوَاقَ نَاقَةٍ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ
»
“মু‘আয ইবন জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে ততক্ষণ পর্যন্ত জিহাদ করেছে যতক্ষণ
কোনো উটের
দুধ দোহন করতে সময় লাগে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব[15]।
পনেরো- আল্লাহভীরু এবং চরিত্রবান লোকঃ
মুত্তাকী এবং চরিত্রবান লোক জান্নাতে যাবে। অধিকাংশ মানুষকে তার তাকওয়া ও সুন্দর চরিত্র জান্নাতে প্রবেশ করাবে। আর
অধিকাংশ মানুষকে তার মুখ ও লজ্জা-স্থান জাহান্নামে প্রবেশ করাবে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ سُئِلَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَكْثَرِ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ الْجَنَّةَ فَقَالَ:
«تَقْوَى اللهُ وَحُسْنُ الْخُلُقِ وَسُئِلَ عَنْ أَكْثَرِ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ النَّارَ فَقَالَ الْفَمُ وَالْفَرْجُ
»
“আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সা.
জিজ্ঞেস করা হল কোন আমলের কারণে সর্বাধিক লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে? তিনি বললেন: তাকওয়া (আল্লাহ ভীতি) ও উত্তম চরিত্র[16]।
ষোলো- ইয়াতীমের লালন পালনকারীঃ
ইয়াতীমের লালন পালনকারী জান্নাতী হবে। শুধু তাই না ইয়াতিমের লালন-পালনকারী জান্নাতে সা. এর সাথে থাকবে। তাই আমাদের উচিত ইয়াতিমকে
সাহায্য করা।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم«كَافِلُ الْيَتِيمِ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ أَنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ فِي الْجَنَّةِ وَأَشَارَ مَالِكٌ بِالسَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى
»
“আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: সা. বলেছেন: ইয়াতীমের লালন পালনকারী-ইয়াতীম তার আত্মীয় হোক আর অনাত্মীয়- ও আমি জান্নাতে এ দুই আঙ্গুলের ন্যায় এ বলে তিনি তাঁর দুই আঙ্গুলকে
একত্রিত করে দেখালেন যে এভাবে এক সাথে থাকব। (হাদিসের বর্ণনাকারী) ইমাম মালেক (রহঃ) শাহাদাত ও
মধ্যমাঙ্গুলির প্রতি ইশারা করে দেখিয়েছেন[17]।
عَنْ سهل رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم: «أنا وكَافِلُ الْيَتِيمِ في الجنة هكذا ِ وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى و فرج بينهما شيئا
»
সাহাল রাদিয়াল্লাহ তা‘আলা আনহু হতে
বর্ণিত সা. বলেছেন, আমি এবং ইয়াতিমকে
লালন-পালনকারী ব্যক্তি জান্নাতে কাছাকাছি থাকব। এবং তার শাহাদাত অঙ্গুলি এবং
মধ্যমা আঙ্গুলীদ্বয় একত্রিত করে ইঙ্গিত করলেন এবং দুইয়ের মাঝে একটু ফাঁক করলেন[18]।
সতেরো- হজ্জে মাবরুরের বিনিময় জান্নাতঃ
হজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ তা‘আলা হজের বিনিময় জান্নাতের ঘোষণা দিয়েছেন। যার হজ্জ কবুল হবে সে অবশ্যই জান্নাতী হবে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم:
«الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلَّا الْجَنَّةُ
»
“আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; সা. বলেছেন: “এক ওমরা থেকে অপর ওমরার মাঝে যে পাপ করা হয়, পরবর্তী ওমরা তার জন্য কাফফারা। আর কবুল হজ্জের একমাত্র প্রতিদান হল জান্নাত[19]।”
আঠারো- মসজিদ নির্মাণ করাঃ
মসজিদ নির্মাণকারী জান্নাতী হবে, যে
ব্যক্তি মসজিদ নির্মাণ করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য
জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন। হাদীস-
عَنْ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ رضى الله عنه قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ «مَنْ بَنَى مَسْجِدًا لِلهِ بَنَى اللهُ لَهُ فِي الْجَنَّةِ مِثْلَهُ»
“ওসমান ইবন আফ্ফান রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি সা. কে
বলতে শুনেছি তিনি বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে একটি
মসজিদ বানাবে আল্লাহ তার জন্য অনুরূপ একটি ঘর জান্নাতে নির্মাণ করবেন[20]।
উনিশ- লজ্জাস্থান ও জিহ্বার হেফাজত
করাঃ
লজ্জাস্থান ও জিহ্বা সংরক্ষণকারী জান্নাতী হবে। লজ্জাস্থান ও জিহ্বার হেফাজত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়। এ দুটির কারণেই মানুষ খুব বেশি বিপথগামী হয়।
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولِ اللهُ صلى الله عليه وسلم
: «مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْجَنَّةَ»
“সাহাল ইবন সা‘দ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: সা. বলেছেন: যে
ব্যক্তি তার দাড়ি ও গোঁফের মধ্যবর্তী স্থান (মুখ) এবং তার উভয় পায়ের মধ্যবর্তী
স্থান (লজ্জাস্থান) সংরক্ষণের জিম্মা গ্রহণ করবে আমি তার জন্য জান্নাতের জিম্মা
গ্রহণ করব[21]।
বিশ- প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করাঃ
প্রতিবেশীকে কষ্ট-দাতা জাহান্নামী হবে আর প্রতিবেশীর প্রতি উত্তম আচরণকারী জান্নাতী হবে। যারা জান্নাতে যেতে চায় তারা যেন তার কোন প্রতিবেশীকে
কষ্ট না দেয়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهُ إِنَّ فُلَانَةَ تَصُوْمُ النَّهَارَ وَتَقُوْمُ اللَّيْلَ وَتُؤْذِي جِيرَانَهَا بِلِسَانِهَا قَالَ «هِيَ فِي النَّارِ» قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فُلَانَةٌ تُصَلِّيْ الْمَكْتُوْبَةَ وَتَصَدَّقَ بِالْأَثْوَارِ مِنْ الْأَقِطِ وَلَا تُؤْذِي جِيرَانَهَا قَالَ «
هِيَ فِي الْجَنَّةِ
»
“আবু হুরাইরাহ রা. থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন: এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল ইয়া সা.! অমুক মহিলা দিনে রোযা রাখে, রাতে তাহাজ্জুদ সালাত পড়ে, কিন্তু সে তার প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়। রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: সে জাহান্নামী। অতঃপর সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করল
যে,
অন্য এক মহিলা শুধু ফরয সালাত আদায় করে, আর পনিরের এক টুকরা করে তা দান করে। কিন্তু সে তার
প্রতিবেশীকে কোন কষ্ট দেয় না। তিনি বললেন: সে জান্নাতী[22]।
সুতরাং, যারা মানুষকে কষ্ট দেয় তাদের নফল
ইবাদত কোন কাজে আসবে না। তাদের সালাত ও সাওম তাদেরকে জাহান্নামের আগুন হতে বাঁচাতে
পারবে না। জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে হলে এবং জান্নাতে প্রবেশ করতে হলে, তাকে
অবশ্যই মানুষকে কষ্ট দেয়া ছাড়তে হবে।
একুশ- আল্লাহর নিরানব্বই নাম মুখস্থ ও
হেফাজত করাঃ
আল্লাহর নিরানব্বই নাম মুখস্থকারী জান্নাতী হবে। অর্থাৎ আল্লাহর নামসমূহ জানা এবং নামসমূহের উপর যথাযথ ঈমান আনা
এবং বাস্তব জীবনে নিজের মধ্যে আল্লাহর নামের বাস্তবায়ন ঘটানো। যে ব্যক্তি আল্লাহর
নিরানব্বইটি নামের যথার্থতা রক্ষা করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم«إِنَّ لِلهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمًا مِائَةً إِلَّا وَاحِدًا مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ
»
“আবূ হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: সা. বলেছেন: আল্লাহর এক কম একশত অর্থাৎ: নিরানব্বই নাম আছে, যে ব্যক্তি তা মুখস্থ করবে সে জান্নাতে যাবে[23]।
বাইশ- কুরআনের হেফজ ও সংরক্ষণ করা:
কুরআনের সংরক্ষণকারী জান্নাতে যাবে। যারা কুরআন পড়ে আল্লাহ তা‘আলা তাদের জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা দান করবে।
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم «يُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ إِذَا دَخَلَ الْجَنَّةَ اقْرَأْ وَاصْعَدْ فَيَقْرَأُ وَيَصْعَدُ بِكُلِّ آيَةٍ دَرَجَةً حَتَّى يَقْرَأَ آخِرَ شَيْءٍ مَعَهُ»
আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: সা. বলেছেন: কুরআন সংরক্ষণকারী যখন জান্নাতে
যাবে তখন তাকে বলা হবে কুরআন পাঠ করতে থাক এবং এক এক স্তর করে আরোহণ করতে থাক। তখন
সে প্রত্যেক আয়াত পাঠের মাধ্যমে একেক স্তর করে আরোহণ করবে। এমনকি তার সংরক্ষিত
(মুখস্থ কৃত) সর্বশেষ আয়াত পাঠ করে সে তার নির্দিষ্ট স্থানে আরোহণ করবে এবং সেটাই
তার ঠিকানা হবে[24]।
তেইশ- সালাম বিনিময় করাঃ
বেশি বেশি সালাম বিনিময়কারী জান্নাতী হবে। সালাম মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাষণ। সালামের দ্বারা
মানুষের মধ্যে ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায় ফলে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং সালাম
জান্নাতে প্রবেশের কারণ হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের
বেশি বেশি করে সালাম দেয়ার তাওফিক দান করুন। হাদীস-
عَنْ عَبْدِ اللهُ بْنِ عَمْرٍو رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم: «اعْبُدُوا الرَّحْمَنَ وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ وَأَفْشُوا السَّلَامَ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ بِسَلَامٍ
»
“আবদুল্লাহ ইবন সালাম রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: সা.
বলেছেন: হে মানব মণ্ডলী, সালাম বিনিময় কর। মানুষকে আহার করাও, যখন মানুষ ঘুমন্ত থাকে তখন সালাত পড়। তাহলে নিরাপদে
জান্নাতে প্রবেশ করবে[25]।
অপর হাদিস, আবু হুরাইরা
রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত সা. বলেন,
«لا تدخلون الجنة حتى تؤمنوا، ولا تؤمنوا حتى تحابوا، أوَلا أدلّكم على شيء إذا فعلتموه تحاببتم؟ أفشوا السلام بينكم»
“তোমরা ততক্ষণ
পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি ঈমানদার না হবে, আর
ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ঈমানদার হবে না যতক্ষণ না তোমরা একে অপরকে ভালো না বাসবে। আর
আমি কি তোমাদের এমন একটি জিনিস বাতিয়ে দেব, যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালবাসবে?
তোমরা তোমাদের নিজেদের মধ্যে সালামের প্রসার ঘটাও”।[26]
চব্বিশ- রোগাক্রান্তকে দেখতে যাওয়াঃ
রুগীকে দেখাশোনা করা এবং কোনো রুগীর খোঁজ খবর নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সা. কোনো রুগী দেখতে যাওয়া ব্যক্তিকে জান্নাতের
সু-সংবাদ দেন। হাদীস-
عَنْ ثَوْبَانَ رضى الله عنه مَوْلَى رَسُولِ اللهُ صلى الله عليه وسلم قَال قَال رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم«عَائِدُ الْمَرِيضِ فِي مَخْرَفَةِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَرْجِعَ
»
“সাওবান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: সা. বলেছেন, রুগীর
দেখাশোনাকারী যতক্ষণ পর্যন্ত ঘরে ফিরে না আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে জান্নাতের বাগানে থাকে[27]।
পঁচিশ- দ্বীনি ইলম শিক্ষালাভকারীঃ
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে দ্বীনের জ্ঞান অন্বেষণ উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়ে, কেউ পথিমধ্যে মারা গেলে,
আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাত দান করবে। হাদীস-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه اَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
« مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ
»
“আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্ সা. বলেছেন:
যে ব্যক্তি দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য পথ চলে আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ
করে দেন[28]।
ছাব্বিশ-ওজুর পর কালিমায়ে শাহাদাত পড়াঃ
ভালো করে ওযু
করার পর যে ব্যক্তি কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করবে, সে জান্নাতের আটটি দরজার মধ্য হতে
যে কোন দরজা দিয়েই জান্নাতে প্রবেশ করবে। হাদীস-
عَنْ عُمَرَ بْنِ الخَطَّبِ رضي الله عنهما قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله: «مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُبْلِغُ أَوْ فَيُسْبِغُ الْوَضُوءَ ثُمَّ يَقُولُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُ اللهُ وَرَسُولُهُ إِلَّا فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ » (رواه مسلم)
অর্থ, ওমর ইবন খাত্তাব রা. হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি ভালো
করে ওযু করে এবং ওযুর পর এ দুআ পড়ে, اَشْهَدُ
أَنْ لَّا
اِلَهَ اِلَّا
اللهُ وَأَنَّ
مُحَمَّدًا عَبْدُهُ
وَرَسُوْلُهُ অর্থ, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন কোন
সত্য ইলাহ নাই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা এবং
রাসূল। তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে। সে তখন যেটি দিয়ে খুশি সেটি
দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।[29]
সাতাশ- সকাল-সন্ধ্যা
সায়্যেদুল ইস্তেগফার পাঠ করাঃ
যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সাইয়্যেদুল
ইস্তেগফার পাঠ করবে এবং সেদিন বা রাতে মারা জাবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাত দান করবে। হাদীস-
عَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم:
«سَيِّدُ الِاسْتِغْفَارِ أَنْ تَقُولَ اللهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ قَالَ وَمَنْ قَالَهَا مِنْ النَّهَارِ مُوقِنًا بِهَا فَمَاتَ مِنْ يَوْمِهِ قَبْلَ أَنْ يُمْسِيَ فَهُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَمَنْ قَالَهَا مِنْ اللَّيْلِ وَهُوَ مُوقِنٌ بِهَا فَمَاتَ قَبْلَ أَنْ يُصْبِحَ فَهُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ»
“সাদ্দাদ ইবন আওস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: সা. বলেছেন:
সায়্যেদুল ইস্তেগফার হল-
“হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রভু, তুমি ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য আর কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আর আমি
হচ্ছি তোমার বান্দা, আর আমি আমার
সাধ্যমত তোমার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্টটা থেকে
তোমার আশ্রয় কামনা করছি। আমার প্রতি তোমার নেয়ামতের স্বীকৃতি প্রদান করছি। আর আমি
আমার গুনাহ খাতা স্বীকার করছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর, নিশ্চয় তুমি ব্যতীত গুনাহ মাফকারী আর কেউ নেই। যে ব্যক্তি দৃঢ়বিশ্বাসসহ এ দো‘আ দিনের বেলা পাঠ করে, আর সন্ধার পূর্বে মৃত্যুবরণ করে সে জান্নাতী। আর যে ব্যক্তি রাতের বেলা একীনসহ এ দু’আ পাঠ করে এবং
সকাল হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করে সেও জান্নাতী[30]।
আটাশ- অন্ধ ব্যক্তি যে তার অন্ধত্বের উপর
ধৈর্য ধারণ করে:
যার চোখ অন্ধ হয়ে গেল, আর সে তাতে ধৈর্যধারণ করল, তাকে আল্লাহ তা‘আলা তার
অন্ধত্বের বিনিময়ে জান্নাত দান করবে। হাদীস-
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ
قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
«إِنَّ اللهَ قَالَ إِذَا ابْتَلَيْتُ عَبْدِي بِحَبِيبَتَيْهِ فَصَبَرَ عَوَّضْتُهُ مِنْهُمَا الْجَنَّةَ
»
“আনাস ইবন মালেক রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি
রাসূলুল্লাহ্ সা. বলতে শুনেছি তিনি বলেন: আল্লাহ বলেন: আমি যখন আমার কোনো প্রিয় বান্দাকে
তার দুটি প্রিয় অঙ্গ (চোখ দ্বারা) পরীক্ষা করি, আর সে তাতে ধৈর্যধারণ করে তখন এর বিনিময়ে আমি তাকে জান্নাত দান করি[31]।
উনত্রিশ- পিতা-মাতার হক আদায় ও
তাদের খেদমত করা:
পিতা-মাতার হক ও তাদের খেদমত করা খুবই
জরুরী। আল্লাহ তা‘আলা তার নিজের হক আদায়ের পরেই পিতা-মাতার হককে বান্দার
উপর ফরয করে দিয়েছেন। পিতা-মাতার হক আদায় করা দ্বারা একজন বান্দা জান্নাতে লাভ
করবে এবং সে জান্নাতের দরজাসমূহ হতে যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। হাদীস-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
«رَغِمَ أَنْفُهُ رَغِمَ أَنْفُهُ رَغِمَ أَنْفُهُ مَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا فَلَمْ يَدْخُلْ الْجَنَّةَ
»
“আবু হুরাইরাহ রা. রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন: ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধুলুণ্ঠিত হোক, ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধু-লুণ্ঠিত হোক, ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধুলুণ্ঠিত হোক, যে তার পিতা-মাতাকে বৃদ্ধ বয়সে পেল তাদের কোন একজনকে বা
উভয়কে অথচ তাদের সন্তুষ্টি অর্জন করে জান্নাত লাভ করতে পারল না[32]।
অপর হাদিসে বর্ণিত-
قال أبو الدرداء سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول :« الوالد أوسط أبواب الجنةفإن شئت فأضع ذلك الباب أو احفظه
»
আবু দারদা রা. বলেন, সা. এরশাদ করেছেন, পিতা-মাতা হচ্ছে, জান্নাতের দরজা
সমূহের মধ্যম দরজা। অতএব, তুমি ইচ্ছা করলে সেই দরজা নষ্ট কর বা সংরক্ষণ কর[33]।
ত্রিশ-কষ্টদায়ক বস্তু রাস্তা থেকে দূর করাঃ
যে ব্যক্তি মুসলমানদের চলাচলের পথ থেকে কোন
কষ্টদায়ক বস্তু দূর করবে, সে জান্নাতে
প্রবেশ করবে। হাদীস-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إِنَّ الشَّجَرَةَ كَانَتْ تُؤْذِي الْمُسْلِمِينَ فَجَاءَ رَجُلٌ فَقَطَعَهَا فَدَخَلَ الْجَنَّةَ
»
“আবূ হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: সা. বলেছেন: একটি
গাছ মুসলমানদেরকে কষ্ট দিতেছিল। তখন একব্যক্তি এসে তা কেটে দিল। এর বিনিময়ে সে
জান্নাত লাভ করল[34]।
একত্রিশ- রুগী ব্যক্তি স্বীয় রোগের উপর ধৈর্যধারণ করাঃ
রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি যখন রোগের কষ্টের উপর
ধৈর্য ধারণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। পক্ষান্তরে যে অধৈর্য হবে, সে এমন
সাওয়াব এ বিনিময়ের অধিকারী হবে না। হাদীস-
عَطَاءُ بْنُ أَبِي رَبَاحٍ رضى الله عنه قَالَ قَالَ لِي ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَلَا أُرِيكَ امْرَأَةً مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ؟ قُلْتُ بَلَى، قَالَ هَذِهِ الْمَرْأَةُ السَّوْدَاءُ أَتَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنِّي أُصْرَعُ وَإِنِّي أَتَكَشَّفُ فَادْعُ اللهَ لِي، قَالَ «إِنْ شِئْتِ صَبَرْتِ وَلَكِ الْجَنَّةُ، وَإِنْ شِئْتِ دَعَوْتُ اللهَ أَنْ يُعَافِيَكِ
» فَقَالَتْ أَصْبِرُ فَقَالَتْ إِنِّي أَتَكَشَّفُ، فَادْعُ اللهَ لِي أَنْ لَا أَتَكَشَّفَ، فَدَعَا لَهَا
“আতা ইবন রাবাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন ইবনে আব্বাস রা. আমাকে
বলেছেন: আমি কি তোমাকে একজন জান্নাতী নারী দেখাব না? আমি বললাম কেন নয়। তিনি এক মহিলার প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন: গতকাল যে মহিলাটি, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে
বলল: যে আমি মৃগী রুগী, আর এ রাগে আক্রান্ত হলে আমার সতর
খুলে যায়। তাই আপনি কি আমার জন্য আল্লাহর নিকট দো‘আ করবেন যেন আল্লাহ আমাকে
সুস্থ করেন? তিনি বললেন: যদি তুমি চাও তাহলে
ধৈর্য ধর আর এর বিনিময়ে তুমি জান্নাত লাভ করবে। আর যদি তুমি চাও তাহলে আমি তোমার
জন্য দো‘আ করি। তিনি তোমাকে সুস্থ করে দিবেন তখন ঐ মহিলা বলল: আমি ধৈর্য ধারণ করব। কিন্তু সাথে এ
আবেদনও করছি যে এ রোগে আক্রান্ত হলে আমার সতর খুলে যায়। আপনি আমার জন্য দো‘আ করুন হাতে
আহার সতর না খুলে। সা. তার জন্য এ দো‘আ করলেন[35]।
বত্রিশ- নবী, শহীদ, সিদ্দীক (সত্যবাদী) ও
নবজাত শিশুঃ
নবী, শহীদ, সিদ্দীক, মৃত্যুবরণকারী নবজাতক শিশু, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতকারী জান্নাতী
হবে।
তেত্রিশ- স্বামীর ভক্ত, অধিক সন্তান
জন্মদানে কষ্ট সহ্যকারী এবং স্বামীর নির্যাতনে ধৈর্য-ধারণকারিণীঃ
স্বীয় স্বামীর ভক্ত, অধিক সন্তান
জন্মদানে কষ্ট সহ্যকারী এবং স্বামীর নির্যাতনে ধৈর্য-ধারণকারিণী মহিলা জান্নাতী হবে।
عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ رضى الله عنه قال:
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِرِجَالِكُمْ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ؟ النَّبِيُّ فِيْ الْجَنَّةِ، وَالصِّدِّيْقُ فِيْ الْجَنَّةِ ، وَالشَّهِيْدُ فِيْ الْجَنَّةِ ، وَالرَّجُلُ يَزُوْرُ أَخَاهُ فِيْ اللهِ فِيْ جَانِبِ الْمُصِرِّ فِيْ الْجَنَّةِ
. أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِنِسِائِكُمْ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ؟ اَلْوَلُوْدُ الْوَدُوْدُ الَّتِيْ إِذَا ظَلَمَتْ هِيْ أَوْ ظُلِمَتْ قَالَتْ
: هَذِهِ يَدِيْ فِيْ يَدِكَ ، لَا أَذُوْقُ غَمَضًا حَتَّى تَرْضى»
“কা‘ব ইবন ওজরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: সা. বলেছেন: আমি কি জান্নাতী পুরুষদের কথা তোমাদেরকে
বলব না?
নবী, শহীদ, সিদ্দীক, মৃত্যুবরণকারী
নবজাতক শিশু, দূর থেকে স্বীয় মুসলিম ভাইকে
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে দেখতে আসে এমন ব্যক্তি জান্নাতী। (তিনি আরও বলেন)
আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী মহিলাদের ব্যাপারে অবগত করাব না? স্বীয় স্বামী ভক্ত, অধিক সন্তান প্রসবে ধৈর্য-ধারণকারী, ঐ পবিত্রা নারী যে তার স্বামীর অত্যাচারে ধৈর্যধারণ করে বলে যে, আমার হাত তোমার হাতে, আমি ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষান্ত হবো
না যতক্ষণ না তুমি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হও[36]।
চৌত্রিশ- হারাম হালালের উপর বিশ্বাসকারীঃ
শরীয়তে হালাল-কৃত বিষয়সমূহকে হালাল
এবং হারাম-কৃত বিষয়সমূহকে হারাম বলে জানা এবং সে অনুযায়ী আমলকারীও জান্নাতী হবে।
عَنْ جَابِرٍ رضى الله عنه أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَرَأَيْتَ إِذَا صَلَّيْتُ الصَّلَوَاتِ الْمَكْتُوبَاتِ وَصُمْتُ رَمَضَانَ وَأَحْلَلْتُ الْحَلَالَ وَحَرَّمْتُ الْحَرَامَ وَلَمْ أَزِدْ عَلَى ذَلِكَ شَيْئًا أَأَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَالَ
« نَعَمْ »
“জাবের রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সা.
জিজ্ঞেস করল ইয়া রাসূলুল্লাহ! যদি আমি ফরয সালাত আদায় করি। রমযানে সিয়াম
পালন করি শরীয়তে হালাল-কৃত বিষয়সমূহকে হালাল বলে জানি এবং শরীয়তে হারাম-কৃত
বিষয়সমূহকে হারাম বলে জানি। আর এর চেয়ে অধিক আর কোন কিছু না করি। তাহলে আমি
জান্নাত পাব? তিনি বললেন: হ্যাঁ[37]।
পঁয়ত্রিশ- বাচ্চাদের মৃত্যুর উপর ধৈর্য ধারণকারিণীঃ
যে কোন বিপদে ধৈর্য ধারণ করার কোন বিকল্প নাই। তবে, কিছু
কিছু বিপদ এমন আছে, যেগুলোর উপর ধৈর্য ধারণ করা খুবই কষ্টকর ও কঠিন। যে কারো
বাচ্চা মারা যাওয়া। তারপরও যে ব্যক্তি এ ধরনের বিপদে ধৈর্য ধারণ করবে, তার জন্য
রয়েছে, জান্নাত। যে ব্যক্তি দুইজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চার
মৃত্যুতে ধৈর্যধারণ করবে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাত দান করবে। হাদীস-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم قَال: «لِنِسْوَةٍ مِنْ الْأَنْصَارِ لَا يَمُوتُ لِإِحْدَاكُنَّ ثَلَاثَةٌ مِنْ الْوَلَدِ فَتَحْتَسِبَهُ إِلَّا دَخَلَتْ الْجَنَّةَ فَقَالَتْ امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ أَوْ اثْنَيْنِ يَا رَسُولَ اللهُ قَالَ أَوْ اثْنَيْنِ»
“আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: সা. একদল আনসারী মহিলাকে
লক্ষ্য করে বললেন: তোমাদের মধ্যে যার তিনটি সন্তান মৃত্যুবরণ করে আর সে তাতে
সাওয়াবের আশা নিয়ে ধৈর্যধারণ করে সে জান্নাতী হবে। তাদের মধ্যে এক মহিলা জিজ্ঞেস
করল,
ইয়া রাসূলুল্লাহ! যদি দুইজন মৃত্যুবরণ করে? তিনি বললেন: দুইজন মৃত্যুবরণ করলেও[38]।
ছত্রিশ- প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করাঃ
যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয
নামাযের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে,
তার জান্নাতে প্রবেশে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না। হাদীস-
عَنْ اَبِيْ اُمَامَةَ رضى الله عنه قَالَ:
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم:
«مَنْ قَرَاءَ آيَةَ الْكَرْسِيِّ دُبُرَ كُلِّ صَلَاةٍ مَكْتُوْبَةٍ لَمْ يَمْنَعْهُ مِنْ دُخُوْلِ الْجَنَّةِ اِلَّا اَنْ يَّمُوْتَ
»
“আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: সা. বলেছেন: যে
ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে তার জন্য মৃত্যু ব্যতীত
জান্নাতে যাওয়ার ব্যাপারে আর কোন বাধা নেই[39]।
সাতত্রিশ- “লা-হাওলা ওলা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ” বেশি বেশি করে পাঠ করাঃ
“লা-হাওলা ওলা কুয়্যাতা ইল্লা
বিল্লাহ” জান্নাতের খাজানাসমূহের একটি খাজানাহ। সুতরাং, আমাদের উচিত বেশি বেশি করে, “লা-হাওলা ওলা কুয়্যাতা ইল্লা
বিল্লাহ” পাঠ করা। হাদীস-
عَنْ أَبِي ذَرٍّ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهُ صلى الله عليه وسلم:
«أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى كَنْزٍ مِنْ كُنُوزِ الْجَنَّةِ؟ قُلْتُ بَلَى يَا رَسُولَ اللهُ قَالَ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهُ
»
“আবু যার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল সা. বলেছেন:
আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতের খনি সম্পর্কে অবগত করাব না। আমি বললাম: ইয়া
রাসূলুল্লাহ! অবশ্যই অবগত করাবেন, তিনি বললেন: লা-হাওলা
ওলা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ (বলা)[40]।
আটত্রিশ- যে
ব্যক্তি “সুবহানাল্লাহিল আযীম ওয়া বিহামদিহী” বেশি বেশি করে পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো
হবে।
عَنْ جَابِرٍ بن عبد الله رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم:
«مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللهُ الْعَظِيمِ وَبِحَمْدِهِ غُرِسَتْ لَهُ نَخْلَةٌ فِي الْجَنَّةِ
»
“জাবের ইবন আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: সা.
বলেছেন: যে ব্যক্তি “সুবহানাল্লাহিল আযীম ওয়া বিহামদিহি” (বড়ত্বের অধিকারী আল্লাহ তাঁর প্রশংসার সাথে পবিত্রতা বর্ণনা
করছি) এ দো‘আ পাঠ করে, তার জন্য
জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হয়[41]।
ঊনচল্লিশ-অন্যায়ভাবে নিহত ব্যক্তিঃ
অন্যায়ভাবে বা নির্যাতিত হয়ে যদি কোন ব্যক্তি নিহত হয়, তাকে আল্লাহ তা‘আলা জান্নাত দান করবে। যেমন- কোন ব্যক্তি
তার সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে অন্যায়ভাবে নিহত হল, তাকেও জান্নাত দান করা হবে। হাদীস-
عَنْ عَبْدِ اللهُ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهُ صلى الله عليه وسلم قَالَ:
«مَنْ قُتِلَ دُونَ مَالِهِ مَظْلُومًا فَلَهُ الْجَنَّةُ
»
“আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: সা.
বলেছেন: যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে অন্যায়ভাবে নিহত হল সে জান্নাতী[42]।”
চল্লিশ- অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাত হওয়াতে ধৈর্য-ধারণকারী মহিলাঃ
যে নারী অনিচ্ছাকৃত ও অকালে গর্ভপাত হওয়াতে ধৈর্য ধারণ করে, সে মহিলা জান্নাতে প্রবেশ করবে। কিয়ামতের দিন বাচ্চাটি তার মাকে টেনে জান্নাতে নিয়ে
যাবে। হাদীস-
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رضى الله عنه عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ:
«وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ!
إِنَّ السِّقْطَ لَيَجُرُّ أُمَّهُ بِسَرَرِهِ إِلَى الْجَنَّةِ إِذَا احْتَسَبَتْهُ
»
“মু‘আয ইবন জাবাল রা. রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা
করেছেন,
তিনি বলেন: ঐ সত্ত্বার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ।
অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ হওয়া বাচ্চা, তার মায়ের নাভী ধরে টেনে টেনে জান্নাতে নিয়ে যাবে। তবে এ শর্তে যে ঐ মহিলা সওয়াবের আশায় তাতে ধৈর্যধারণ করেছিল[43]।
[1] মুসলিম, জান্নাত
ও তার নেয়ামত সমূহের বর্ণনা অধ্যায়, হাদীস নং ২৮৪০।
[2] মুসলিম, হাদীস নং
২৮৫৩।
[3] আহমদ, ১/৪১৫।
হাদীস নং ৩৯৩৮।
[4] বুখারি, কুরআন ও
সূন্নাহকে আকড়ে ধরা বিষয় আলোচনা অধ্যায়। হাদীস নং ৭২৮০।
[5] মুসলিম,
মুসাফিরদের সালাত আদায় করা অধ্যায়। হাদীস নং ৭২৮।
[6] মুসলিম কিতাবুল
ঈমান, পরিচ্ছেদ: যে ঈমান একজন মুমিনকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। হাদীস নং ১৩।
[7] তিরমিযি,
জান্নাতের আলোচনা। পরিচ্ছেদ: জান্নাতের কামরাসমূহের বৈশিষ্ট্য; ২/২০৫১, হাদীস নং
১৯৮৪।
[8] মুসলিম, কিতাবুল
জান্নাহ, পরিচ্ছেদ: জান্নাতী ও জাহান্নামীদের গুনাগুণের বিষয়ে আলোচনা, হাদীস নং
২৮৬৫।
[9] আবু দাউদ, বিতির
অধ্যায়, পরিচ্ছেদ ইস্তেগফার বিষয়ে আলোচনা, ১/১৩৫৩, হাদীস নং ১৫২৯।
[10] মুসলিম, কিতাবুল
বির ওয়াস-সিলা, কন্যা সন্তানের প্রতি দয়া করা বিষয়ে আলোচনা, হাদীস নং ২৬৩১।
[11] বুখারি ও মুসলিম,
দেখুন সংক্ষিপ্ত মুসলিম, হাদিস নং- ১৬৮২।
[12] মুসলিম, হাদিস:
১৪৪
[13] ইবনে হিব্বান,
সহীহ জামে আসসগীর ১ম খণ্ড হাদিস নং-৬৭৩
[14] আবু দাউদ,
কিতাবুল জিহাদ, হাদিস নং- ২/২২০০
[15] তিরমিযি, জিহাদের
ফযিলত অধ্যায়, হাদিস নং-২/১৩৫৩
[16] তিরমিযি, কিতাবুল
বির ওয়াসসিলা, পরিচ্ছেদ: উত্তম চরিত্র বিষয়ে আলোচনা।
[17] মুসলিম, জুহুদ
অধ্যায়,
[18] বুখারি, হাদিস:
৪৯৯৮
[19] বুখারি ও মুসলিম,
ওমরা অধ্যায়।
[20] মুসলিম, যুহ্দ
অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মসজিদ নির্মানের ফযিলত বিষয়ে আলোচনা।
[21] বুখারী, হাদিস:
৬৪৭৪
[22] আহমদ, হাদিস
নং-১৩৬।
[23] বুখারি মুসলিম আল
লু লু ওয়াল মারজান, ২য় খণ্ড হাদিস নং-১৭১৪
[24] ইবনে মাযাহ,
কিতাবুল আদাব, পরিচ্ছেদ, কুরআন তিলাওয়াতের সাওয়াব বিষয়ে আলোচনা: ২/৩০৪৭
[25] তিরমিযি,
কিয়ামতের আলোচনা, অনুচ্ছেদ নং-১০/২০১৩৯
[26]
মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, পরিচ্ছেদ : জান্নাতে মুমিন ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করবে না,
হাদিস নং ৫৪।
[27] মুসলিম, কিতাবুল
বির, পরিচ্ছেদ, অসুস্থদের দেখতে যাওয়া বিষয়ে আলোচনা।
[28] মুসলিম কিতাবুজ
যিকর, পরিচ্ছেদ, কুরআন তিলাওয়াতের জন্য একত্র হওয়া বিষয়ে আলোচনা।
[29] মুসলিম কিতাবুত
তাহারাহ, পরিচ্ছেদ: ওজুর পর দু’আ বিষয়ে আলোচনা।
[30] বুখারি, হাদিস
নং-২০৭১০।
[31] বুখারি কিতাবুল
মারাদ্ব, পরিচ্ছেদ: যার চোখ নষ্ট তার ফযিলত সম্পর্কে আলোচনা।
[32] মুসলিম, কিতাবুল
বির ওয়াসিলা, পরিচ্ছেদ: মাতা-পিতার খেদমতকে প্রাধান্য দেয়া বিষয়ে আলোচনা।
[33] সুনানে তিরমিযি,
হাদিস: ১৯০০
[34] মুসলিম, কিতাবুল
বির ওয়াসসিলা, পরিচ্ছেদ: রাস্তা হতে কষ্টদায় বস্তু সরানো বিষয়ে আলোচনা।
[35] বুখারী, কিতাবুল
মারদ্বা।
[36] তাবরানী আল জামে,
আল্লামা আলবানীর জামে আসসগীর, হাদিস নং-২৬০১
[37] মুসলিম কিতাবুল
ঈমান, পরিচ্ছেদ: যারা জান্নাতে প্রবেশ করবেন, তাদের বিষয়ে আলোচনা।
[38] মুসলিম, কিতাবুল
বির ওয়াসিলা, পরিচ্ছেদ: যার কোন বাচ্চা মারা যাওয়ার পর তার উপর সাওয়াবের আশা করে,
সে বিষয়ে আলোচনা।
[39] নাসায়ী, ইবনে
হিব্বান, ত্বাবরানী, আল্লামা আলবানী রহ. এর সিলসিলাতুল আহাদিস আস-সহীহা খণ্ড দুই
হাদিস নং-৯৭২
[40] ইবনে মাজাহ, সুনান ইবনে মাজাহ লি
আলবানী খণ্ড ২য়, হাদীস
নং-৩০৮৩
[41] তিরমিযি, আল্লামা
আলবানী রহ. এর সহীহ আল জামে আত-তিরমিযি, ৩য় খণ্ড, হাদিস নং-২৭৫৭
[42] নাসায়ী, খুন করা
হারাম হওয়া অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: যে ব্যক্তি সম্পদ রক্ষার্থে মারা যায় সে বিষয়ে
আলোচনা: ৩/৩৮০৮।
[43] ইবনে মাজাহ,
কিতাবুল জানায়েয, হাদিস: ১/১৩০৫