ধূমপান
শরীরের জন্য ক্ষতিকর সবার নিকট প্রমাণিত। এতে আরো রয়েছে অর্থের অপচয় ও মানুষের
কষ্ট। হাদিসে এসেছে: “মানুষের জন্য যা কষ্টদায়ক, ফেরেশতাদের জন্য তা কষ্টদায়ক”।[1]
উত্তর:
ধূমপান হারাম, কারণ ধূমপান খবিস বস্তুর অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ ও তার রাসূল খবিস
বস্তু হারাম ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুণাগুণ বর্ণনায় বলেন:
﴿ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ ١٥٧ ﴾ [الاعراف: ١٥٦]
“এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে”।[2]
দ্বিতীয়ত ধূমপানে রয়েছে শারীরিক ক্ষতি ও অর্থের অপচয়,
অথচ শরীয়ত শরীর ও সম্পদ সংরক্ষণ করার নির্দেশ প্রদান করেছে। মানব জাতির সংরক্ষণ ও উম্মতের হিফাজতের জন্য
আলেমগণ যে পাঁচটি বস্তু হিফাজত করা অতীব জরুরী ঘোষণা করেছেন, তার মধ্যে শরীর ও
সম্পদ অন্যতম। অতএব শরীর ও সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করা অপরিহার্য। হাদিসে সম্পদ
নষ্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। সন্দেহ নেই ধূমপানের জন্য সম্পদ ব্যয় করা অপচয়ের শামিল,
বরং ধূমপানের জন্য খরচ করা প্রকৃত পক্ষে নিজের ও সমাজের অনিষ্ট সাধন করা।[3]
ধূমপান হারাম মর্মে শায়খ আব্দুল আযিয ইব্ন বায রাহিমাহুল্লাহ ও ফতোয়া
বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়া লক্ষ্য করুন:
প্রশ্ন-২: ধূমপানের হুকুম কী? ধূমপান
হারাম না মকরুহ? ধূমপান ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান কি?
উত্তর:
ধূমপান হারাম। ধূমপান কুরআনে বর্ণিত নিষিদ্ধ খবিস বস্তুর অন্তর্ভুক্ত। ধূমপানে রয়েছে বিভিন্ন রোগের উপাদান।
আল্লাহ তা‘আলা বান্দার ওপর পবিত্র
খাদ্য-পানীয় হালাল করেছেন। অপবিত্র ও খারাপ বস্তু তিনি বান্দার ওপর হারাম করেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:
﴿ يَسَۡٔلُونَكَ مَاذَآ أُحِلَّ لَهُمۡۖ قُلۡ أُحِلَّ لَكُمُ ٱلطَّيِّبَٰتُ ٤ ﴾ [المائدة: ٤]
“তারা তোমাকে প্রশ্ন করে, তাদের
জন্য কী বৈধ করা
হয়েছে? বল, ‘তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে সব ভাল বস্তু”।[4]
আল্লাহ
তা‘আলা সূরা আরাফে নবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুণাগুণ
বর্ণনায় বলেন:
﴿ يَأۡمُرُهُم بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَىٰهُمۡ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ ١٥٧ ﴾ [الاعراف: ١٥٦]
“যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের
জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর
অপবিত্র বস্তু হারাম করে”।[5]
সর্বপ্রকার ধূমপান খবিস বস্তুর অন্তর্ভুক্ত, অনুরূপ
নেশাদ্রব্য সকল প্রকার বস্তু বিক্রয় করা খবিস কর্মের অন্তর্ভুক্ত। তাই ধূমপানের
ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্য মদের মতই হারাম। যারা ধূমপান করেন অথবা তার ব্যবসায়
জড়িত তাদের সবার ওপর ওয়াজিব দ্রুত তাওবা করে আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করা। পূর্বের
কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ভবিষ্যতে না করার দৃঢ় অঙ্গিকার করা। সত্যিকার অর্থে যে
তাওবা করবে, আল্লাহ তার তাওবা কবুল করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٣١ ﴾ [النور : ٣١]
“হে
মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর”।[6] তিনি আরো বলেন:
﴿ وَإِنِّي لَغَفَّارٞ لِّمَن تَابَ ٨٢ ﴾ [طه: ٨٢]
“আর অবশ্যই আমি তার প্রতি ক্ষমাশীল, যে তাওবা করে”।[7]
[1] বুখারী
ও মুসলিম।
[2] সূরা আল-আরাফ: (১৫৭)
[3] ফতোয়া লাজনায়ে দায়েমাহ:
খ.২২, পৃ.১৭৯-১৮০.
[4] সূরা আল-মায়েদা: (৪)
[5] সূরা আল-আরাফ: (১৫৭)
[6] সূরা আন-নূর: (৩১)
[7] সূরা ত্বহা: (৮২)
এই বিভাগের আরো লেখা পড়ুনঃ