সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ্র জন্য। ছালাত এবং সালাম বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর উপর।
যে ব্যক্তি আল্লাহ্র উপর
তাওয়াক্কুল ও ভরসা করে না,
তার ঈমান নেই। মহান
আল্লাহ বলেন,
﴿وَعَلَى ٱللَّهِ فَتَوَكَّلُوٓاْ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ٢٣ ﴾ [المائدة: ٢٣]
তিনি অন্যত্র বলেন,
﴿ إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَجِلَتۡ قُلُوبُهُمۡ وَإِذَا تُلِيَتۡ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتُهُۥ زَادَتۡهُمۡ إِيمَٰنٗا وَعَلَىٰ رَبِّهِمۡ يَتَوَكَّلُونَ ٢ ﴾ [الانفال: ٢]
‘যারা মুমিন, তারা এমন যে, যখন
আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, তখন তাদের অন্তরসমূহ ভীত হয়ে পড়ে। আর যখন তাদের সামনে তার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন সেই
আয়াতসমূহ তাদের ঈমানকে আরও বাড়িয়ে দেয় এবং তারা তাদের প্রতিপালকের উপর ভরসা করে’ (আল-আনফাল ৩)।
বুঝা গেল, আল্লাহ্র উপর ভরসা ঈমানের অন্যতম একটি শর্ত। আর আল্লাহ্র উপর ভরসার অর্থ হচ্ছে, বান্দা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করবে যে, সবকিছুই
আল্লাহ্র হাতে। তিনি যা চান, তা হয়। পক্ষান্তরে যা তিনি চান না, তা হয় না। উপকার ও ক্ষতি সাধন সবকিছুই তাঁর হাতে। তিনি
যাকে যা খুশী দেন আর যাকে যা খুশী দেন না। নেই কোনো
ক্ষমতা এবং নেই কোনো শক্তি তিনি ব্যতীত। রাসূল
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেন,
‘হে বৎস! আমি তোমাকে কয়েকটি বাণী শিক্ষা দেব: (সেগুলি
হচ্ছে) আল্লাহ্র আদেশ-নিষেধের
হেফাযত করবে, তাহলে তিনি তোমাকে হেফাযত করবেন। আল্লাহ্র আদেশ-নিষেধের
হেফাযত করবে, তাহলে তুমি তাঁকে তোমার সামনে পাবে। আর যখন
কিছু চাইবে, তখন আল্লাহ্র কাছেই চাও এবং যখন সাহায্য প্রার্থনা করবে, তখন আল্লাহ্র কাছেই
সাহায্য প্রার্থনা কর। জেনে রেখো, দুনিয়ার
সবাই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যদি তোমার কোনো উপকার করতে চায়, তাহলে
আল্লাহ তোমার জন্য যতটুকু লিখে রেখেছেন, তার বাইরে কিঞ্চিৎ পরিমাণ উপকারও
তারা করতে পারবে না। পক্ষান্তরে তারা সম্মিলিত
প্রচেষ্টায় যদি তোমার ক্ষতি করতে চায়, তাহলে আল্লাহ যতটুকু তোমার তাকদীরে লিখে রেখেছেন, তার বাইরে কিঞ্চিৎ পরিমাণ ক্ষতিও
তারা করতে পারবে না। কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং
কালি শুকিয়ে গেছে
(অর্থাৎ তাক্বদীর লেখা শেষ হয়ে গেছে)’ (মুসনাদে আহমাদ,
১/২৯৩)।
অতএব, আল্লাহ্র উপর ভরসা বান্দার কাঙ্খিত বস্তু হাছিলের এবং অনাকাঙ্খিত
বস্তু প্রতিহতের অন্যতম কারণ ও মাধ্যম। সেজন্য
যে ব্যক্তি এসব কারণকে অস্বীকার করবে, তার আল্লাহ্র উপর
ভরসার বিষয়টি সঠিক প্রমাণিত হবে না। এসব
কারণকে স্বীকার করার অর্থ এগুলির উপর ভরসা করা নয়। বরং এসব কারণের উপর নির্ভর না করা আল্লাহ্র উপর পূর্ণ ভরসার অন্তর্ভুক্ত। মূলকথা, বান্দার পূর্ণ ভরসা ও
নির্ভরতা হতে হবে একমাত্র আল্লাহর উপর, অন্য কিছুর উপর নয়।
কিন্তু আল্লাহ্র উপর বান্দার ভরসা যখন দুর্বল
হয়ে যায়, তখন তার অন্তর বিভিন্ন কারণ ও মাধ্যমের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং ঐ
কারণসমূহের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ থেকে সে গাফেল হয়ে যায়। কখনও কখনও আল্লাহ সম্পর্কে তার গাফলতি বৃদ্ধি পেয়ে শরী‘আত অনোনুমোদিত কারণের উপর সে নির্ভর করতে শুরু করে। যুগে যুগে তাবীয ব্যবহারকারীদের অবস্থা এটাই। অত্র সংকলনে শারঈ মানদণ্ডে তাবীয-কবচ ও ঝাড়-ফুঁকের বিভিন্ন দিকের
উপর নাতিদীর্ঘ একটি বিশ্লেষণের প্রয়াস করা হয়েছে। মহান আল্লাহ ক্ষুদ্র এই প্রয়াসটুকু কবূল করুন। আমীন!
‘তাবীয’-এর পরিচয়
অসুখ-বিসুখ, চোখ লাগা বা বদনযর, জাদু, জিন-শয়তানের আছর ইত্যাদি কোনো সম্ভাব্য বা
ঘটিত অকল্যাণ দূর করতে অথবা কোনো কল্যাণ লাভের উদ্দেশ্যে পূতিঁ, কাঠ, হাড়, সূতা, কাগজ
ইত্যাদি দেহে, গৃহে, গাড়ীতে বা অন্য কিছুতে ঝুলানোকে ‘তাবীয’ বলে। এই অর্থে যিক্র-আযকার ও দু‘আ চামড়া, কাগজ বা অন্য কিছুতে লিখে ঝুলালে তাও তাবীযের আওতায় পড়বে। বাসা-বাড়ীর ফটকে বা কোনো স্থানের সম্মুখভাগে ঘোড়ার পায়ের নাল ঝুলানোও তাবীযের
অন্তর্ভুক্ত। অনুরূপভাবে গাড়ীর পেছনে বা সামনে
জুতা-সেন্ডেল ঝুলানো বা গাড়ীর ভেতরের আয়নায় নীল পূঁতি, তাসবীহ
ইত্যাদি ঝুলানোও তাবীযের অন্তর্ভুক্ত। এসব
জিনিস রোগীর বা সাধারণ কোনো ব্যক্তির বালিশ বা বিছানার নীচে অথবা অন্য কোথাও বিশেষ
নিয়্যতে রাখলে তাও তাবীয বলে গণ্য হবে।
জাহেলী যুগে ‘তাবীয’
‘তাবীয’ ছিল জাহেলী যুগের বহুলপ্রচলিত
একটি বিষয়। সম্ভাব্য অসুখ-বিসুখ, চোখ লাগা, নানা
বিপদাপদ, বালা-মুছীবত ইত্যাদি থেকে নিজেদেরকে এবং
গৃহপালিত পশুকে বাঁচানোর জন্য জাহেলী যুগের লোকেরা ‘তাবীয’ ঝুলাতো। ক্ষতিকর আত্মার -তাদের
বিশ্বাস মতে- উপর বিজয় লাভও তাদের তাবীয ঝুলানোর আরেকটি অন্যতম কারণ ছিল।
জাহেলী যুগের আরবরা যখন নির্জন কোনো প্রান্তে যেত, তখন তারা জিন, শয়তান ইত্যাদির ক্ষতির আশঙ্কা করত। ফলে
তাদের একজন দাঁড়িয়ে উচ্চ স্বরে বলত, আমরা এই উপত্যকার ছোট ছোট জীনগুলো থেকে বাঁচার জন্য বড় সরদারের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তাদের বিশ্বাস মতে, এই আশ্রয় প্রার্থনার কারণে কেউ তাদের ক্ষতি করত না।
এই শির্কী আশ্রয়
প্রার্থনার পাশাপাশি জাহেলী যুগের লোকেরা জিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য পশু কুরবানীর মাধ্যমে তাদের সান্নিধ্য লাভের প্রয়াস চালাত। কেউ বাড়ী বানালে বা কূপ খনন করলে সে জিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য পশু যবেহ করত।
তারা বিশ্বাস করত, কিছু কিছু পাথর, গাছ, প্রাণী এবং খণিজ পদার্থে এমন বৈশিষ্ট্য আছে, যা তাদেরকে জিনের ক্ষতি এবং মানুষের বদনযর থেকে বাঁচাতে পারে। সেজন্য তারা সেগুলিকে তাবীয হিসাবে ঝুলাত এবং সেগুলির উপর তাদের অন্তঃকরণসমূহকে নির্ভরশীল করে ফেলত। এ সবকিছুর মূলে ছিল মহান প্রভূ সম্পর্কে তাদের চরম মূর্খতা ও অজ্ঞতা এবং তাঁর প্রতি তাদের অনাস্থা। সেকারণে তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের তাবীযের সমারোহ দেখা যেত। যেমন:
১. ‘নুফরা’ নামক এক প্রকার তাবীয, যা তারা চোখ লাগার ভয়ে বাচ্চাদের দেহে ঝুলাত। কখনও কখনও তারা এই নুফরাকে অপবিত্র জিনিস দিয়ে তৈরী করত। যেমন: হায়েযের নেকড়া। আবার কখনও তা তৈরী করত নিকৃষ্ট নাম দিয়ে।
২. শিয়াল বা বিড়ালের দাঁত।
৩. ‘আক্বরা’ নামের এক প্রকার তাবীয, যা মহিলারা গর্ভধারণ না করার অভিপ্রায়ে কোমরে বাঁধত।
৪. ‘ইয়ানজালিব’ নামক এক প্রকার তাবীয, যা রাগান্বিত স্বামীকে ফিরিয়ে আনার জন্য এবং তার সহানুভূতি লাভের জন্য ব্যবহার করা হত।
৫. ‘তিওয়ালা’ নামের এক প্রকার তাবীয, যা স্বামীর ভালবাসা অর্জনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হত।
৬. ‘ক্বুবলা’ নামের এক প্রকার সাদা পুঁতি, যা চোখ লাগা থেকে রক্ষার জন্য ঘোড়ার গলায় ঝুলানো হত।
৭. ‘তাহ্বীতা’ নামক লাল এবং কালো রংয়ের পাকানো সূতা, যা মহিলারা চোখ লাগা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মাজায় বেঁধে রাখত।
ইসলাম পরবর্তী যুগে ‘তাবীয’
জাহেলী যুগের মানুষ কল্যাণ সাধনে ও অকল্যাণ দূরীকরণে আল্লাহকে
ছেড়ে তাবীয-কবচের উপর নির্ভর করত,
যা মূর্খতা, ভ্রষ্টতা এবং শির্ক বৈ আর কিছুই নয়। তাওহীদের
সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক হওয়ায় ইসলাম কঠোরভাবে তাবীযকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ক্বায়েস ইবনে সাকান আল-আসাদী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, একদা আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁর স্ত্রীর কাছে গিয়ে তাঁর দেহে লাল তাবীয দেখতে পেয়ে তা ছিড়ে ফেললেন এবং
বললেন, “নিশ্চয়ই আব্দুল্লাহর পরিবার শির্কমুক্ত”। তিনি আরো বললেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর কাছ থেকে এই হাদীছটি মুখস্থ করেছি: নিশ্চয়ই (নিষিদ্ধ)
ঝাড়ফুঁক, তাবীয এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টিকারী বিশেষ তাবীয (তিওয়ালা) শির্কের অন্তর্ভুক্ত[1]। তাবীয নিষিদ্ধকারী আরো কিছু অকাট্য দলীল ‘পবিত্র কুরআনকে বা কুরআনের কোনো আয়াতকে তাবীয হিসাবে ব্যবহার প্রসঙ্গ’ শিরোনামের
অধীনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসলামে তাবীয ঝুলানোর বিধান
তাবীয কি দিয়ে তৈরী, তাবীয ঝুলানোর
লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কি, তাবীয ঝুলানোর পেছনে তাবীয ব্যবহারকারীর
বিশ্বাসইবা কি- এ ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে তাবীযের বিধানও বিভিন্ন রকম হয়ে
থাকে। যেমন:
১. জিন, শয়তান, মানুষ বা অন্য কোনো সৃষ্টির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে লিখিত তাবীয: এ প্রকার
তাবীয বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রকার তাবীয ব্যবহারকারী ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে
যাবে এবং পরকালে সে জাহান্নামের স্থায়ী বাসিন্দা হবে। কেননা আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে এমন বিষয়ের সাহায্য প্রার্থনা করা শির্ক,
যে বিষয়ে সাহায্য করার ক্ষমতা তার নেই। মহান আল্লাহ বলেন,
﴿قُلۡ أَفَرَءَيۡتُم مَّا تَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ إِنۡ أَرَادَنِيَ ٱللَّهُ بِضُرٍّ هَلۡ هُنَّ كَٰشِفَٰتُ ضُرِّهِۦٓ أَوۡ أَرَادَنِي بِرَحۡمَةٍ هَلۡ هُنَّ مُمۡسِكَٰتُ رَحۡمَتِهِۦۚ﴾ [الزمر: ٣٨]
‘বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি আল্লাহ আমার অনিষ্ট করার
ইচ্ছা করেন, তবে তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে ডাক, তারা কি সে অনিষ্ট দূর করতে পারবে? অথবা
তিনি আমার প্রতি রহমত করার ইচ্ছা করলে তারা কি সে রহমত রোধ করতে পারবে?’ (আয-যুমার,
৩৮)।
অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি তাবীয ঝুলালো, সে শির্ক করল’ (আহমাদ,
হাকেম)।
২. বিভিন্ন প্রকার নকশা, চিত্র,
জাদুমন্ত্র, নাম, শব্দ সম্বলিত তাবীয, যেগুলির অর্থ বোধগম্য নয়: এ
প্রকারের তাবীয হারাম। কেননা এগুলি মানুষকে শির্কের দিকে নিয়ে যায়।
৩. বালা-মুছীবত দূর করার জন্য
পূঁতি, রিং, সূতা,
আংটি ইত্যাদি ঝুলানো: এগুলি ঝুলিয়ে যদি কেউ
বিশ্বাস করে যে, খোদ এগুলি বালা-মুছীবত দূর করতে সক্ষম,
তাহলে সে বড় শির্ক করল। কেননা সে আল্লাহ্র সাথে অন্য কিছুকে শরীক স্থাপন
করল। পক্ষান্তরে যদি সে বিশ্বাস করে যে, উপকার-ক্ষতি
শুধুমাত্র এক আল্লাহ্র হাতে; কিন্তু পূঁতি,
রিং,
সূতা, আংটি ইত্যাদি কারণ মাত্র, তাহলে সে এমন কিছু বস্তুকে কারণ
বানালো, যেগুলিকে আল্লাহ কারণ বানান নি। ফলে এই বিশ্বাস রেখে ঐসব জিনিস ঝুলালে তা হারাম বলে গণ্য
হবে এবং ছোট শির্কে পরিণত হবে।
মোদ্দাকথা: এগুলির ব্যবহারকারী যদি বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ
ব্যতীত এসব জিনিসের নিজস্ব শক্তি রয়েছে, তাহলে সে বড় শিরককারী হিসাবে গণ্য হবে। পক্ষান্তরে যদি সে বিশ্বাস করে যে, সবকিছু আল্লাহ্র হাতে; কিন্তু
এগুলি মাধ্যম মাত্র এবং এগুলির নিজস্ব কোনো শক্তি নেই, তাহলে সে
ছোট শিরককারী হিসাবে গণ্য হবে। কেননা সে শরী‘আতে অনোনুমোদিত কারণকে কারণ হিসাবে গ্রহণ করেছে এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যের দিকে
তার অন্তর ঝুঁকে পড়েছে। তার অন্তর যদি এসব জিনিসের
প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং সে এগুলির মাধ্যমে কল্যাণ সাধন ও অকল্যাণ দূরীকরণের
আশা করে, তাহলে তার এই আমল বড় শির্কের
মাধ্যম হিসাবে গণ্য হবে।
৪. কুরআনের আয়াত, হাদীছ বা মাসনূন দু‘আ
সম্বলিত তাবীয:
এ প্রকারের তাবীয নিয়ে উলামায়ে
কেরামের মধ্যে মতভেদ আছে,
যে সম্পর্কে অত্র সংকলনে বিস্তারিত
আলোচনা করা হয়েছে।
তাবীয কখন ‘বড় শিরক’ হবে এবং
কখন
‘ছোট শিরক’
হবে?
কেউ যদি তাবীয ঝুলিয়ে আল্লাহ ব্যতীত তার ইবাদত করে, তাহলে তা ‘বড় শির্ক’ হিসাবে
গণ্য হবে। অনুরূপভাবে তাবীয ব্যবহারকারী যদি
বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ্র ইচ্ছা ছাড়াই এই তাবীযই তাকে হেফাযত করছে, তার রোগ-বালাই
দূর করছে বা তার থেকে অকল্যাণ দূর করছে, তাহলে তাও ‘বড় শির্ক’ বলে গণ্য
হবে। পক্ষান্তরে যদি কেউ বিশ্বাস করে
যে, এই তাবীয চোখ লাগা ও বালা-মুছীবত থেকে তার মুক্তির কারণ, তাহলে তা ‘ছোট শির্ক’ হিসাবে
গণ্য হবে।
বড় শির্ক এবং ছোট শির্কের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, বড় শির্ককারীর উপর মুসলিম শাসক ‘রিদ্দার হদ্’ কায়েম করবে। আর তার সমস্ত নেক আমল বরবাদ হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন,
﴿ وَلَقَدۡ أُوحِيَ إِلَيۡكَ وَإِلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكَ لَئِنۡ أَشۡرَكۡتَ لَيَحۡبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٦٥ ﴾ [الزمر: ٦٥]
‘নিশ্চয়ই আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি অহি হয়েছে যে, যদি আপনি আল্লাহ্র সাথে শরীক
স্থির করেন, তাহলে নিঃসন্দেহে আপনার কর্ম
নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং অবশ্যই অবশ্যই আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন’ (আয-যুমার, ৬৫)।
ছোট শির্ক বলে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে, ছোট শির্ক অপরাপর কাবীরা গোনাহ বা বড় পাপের চেয়েও
বড় পাপ (ফাতহুল
মাজীদ শারহু কিতাবিত-তাওহীদ/১২১)।
পবিত্র
কুরআনকে বা কুরআনের কোনো আয়াতকে তাবীয হিসাবে ব্যবহার প্রসঙ্গ
কুরআন থেকে তাবীয বিভিন্নভাবে হতে পারে। যেমন: (১)
কাগজে পবিত্র কুরআনের আয়াত লিখে তাবীয হিসাবে ব্যবহার করা। (২) কুরআন মাজীদকে খুব ছোট আকারে প্রিন্ট করে তাবীয হিসাবে ব্যবহার করা। (৩) কেউ কেউ কুরআন মাজীদকে দেহে না ঝুলিয়ে সঙ্গে করে নিয়ে বেড়ায়। (৪) কেউ কেউ আবার কুরআনের আয়াতকে স্বর্ণ বা রৌপ্য খণ্ডে লিখে তা তাবীয হিসাবে
ব্যবহার করে।
তাবীয যদি কুরআন ও মাসনূন দু‘আ দিয়ে না হয়, তাহলে উলামায়ে কেরামের ঐক্যমতের
ভিত্তিতে তা হারাম। তবে তাবীয কুরআন ও মাসনূন দু‘আ দিয়ে হলে তা ব্যবহার করা যাবে কিনা সে বিষয়ে
মতভেদ আছে।
প্রথম মত: তাবীয কুরআন দিয়ে হলেও তা ব্যবহার করা নিষেধ। আব্দুল্লাহ ইবনে উকাইম, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর, উক্ববাহ
ইবনে আমের, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ,
আসওয়াদ, আলক্বামাহ, ইবরাহীম নাখাঈ (রহেমাহুমুল্লাহ) প্রমুখ
এমতের পক্ষাবলম্বন করেছেন। তাঁদের
দলীলসমূহ:
১.
তাবীয নিষিদ্ধকারী দলীলসমূহে সাধারণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা
হয়েছে। তাবীযের কোন্টি কুরআন থেকে এবং কোন্টি কুরআন
থেকে নয়, সেগুলিতে এজাতীয় কোনো পার্থক্যের উল্লেখ নেই। আর উছূলে ফিক্বহের একটি মূলনীতি হচ্ছে, শরী‘আতের সাধারণ কোনো আদেশ-নিষেধ(عام) সাধারণই থাকবে, যতক্ষণ
তাকে নির্দিষ্টকারী (مخصِّص) কোনো
দলীল না আসবে। তাবীয নিষিদ্ধকারী সাধারণ দলীলসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে:
(ক) উক্ববা
ইবনে আমের আল-জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর কাছে একটি দল আসলে তিনি তাঁদের ৯ জনের বায়‘আত গ্রহণ করলেন,
কিন্তু একজনের বায়‘আত গ্রহণ করলেন না। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, হে
আল্লাহ্র রাসূল! আপনি ৯ জনের বায়‘আত গ্রহণ করলেন, কিন্তু এই ব্যক্তির বায়‘আত গ্রহণ করলেন না?
তিনি বললেন, তার দেহে তাবীয আছে। অতঃপর তিনি তাঁর হাত ঢুকিয়ে তাবীযটি ছিড়ে ফেললেন। এরপর তার বায়‘আত গ্রহণ করলেন এবং বললেন, ‘যে ব্যক্তি তাবীয ঝুলালো, সে শির্ক করল’[2]।
(খ) তিনি
অন্যত্র বলেন, ‘নিশ্চয়ই (নিষিদ্ধ) ঝাড়ফুঁক,
তাবীয এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা
সৃষ্টিকারী বিশেষ তাবীয (তিওয়ালা) শির্কের অন্তর্ভুক্ত’[3]।
(গ) আব্দুল্লাহ ইবনে উকাইম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো কিছু ঝুলাবে, তাকে তার দিকে ঠেলে দেওয়া হবে’[4]।
এসব হাদীছে সাধারণভাবে সব ধরনের তাবীয নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোন্টি কুরআন থেকে এবং কোন্টি কুরআন থেকে নয়, তার কোনো
পার্থক্য করা হয়নি।
২.
এই আমল যদি শরী‘আত সম্মত হত,
তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই তাঁর উম্মতকে তা বলে দিতেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যিক্র-আযকার ও
দু‘আ সম্বলিত সবগুলি হাদীছ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সেগুলিতে
বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি যিক্রটি বা দু‘আটি বলবে’, ‘যে ব্যক্তি যিক্রটি বা দু‘আটি পড়বে’। একটি হাদীছেও বলা হয়নি,
‘যে ব্যক্তি যিক্রটি বা দু‘আটি লিখবে’,
‘যে ব্যক্তি যিক্রটি বা দু‘আটি ঝুলাবে’। সেজন্য ইবনুল আরাবী
(রহেমাহুল্লাহ) বলেছেন,
কুরআন ঝুলানো সুন্নাত নয়; বরং সুন্নাত হচ্ছে, কুরআন
তেলাওয়াত করা ও গবেষণা করা।
৩.
শির্কের দ্বার বন্ধ করার মহান উদ্দেশ্যে এ প্রকারের তাবীযও
অবৈধ হবে। আমরা যদি বলি যে, কুরআন
এবং ছহীহ সুন্নাহ দ্বারা লিখিত তাবীয বৈধ, তাহলে শির্কের দরজা উন্মুক্ত হবে এবং অবৈধ তাবীযের সাথে বৈধ তাবীযের সংমিশ্রণ ঘটে
যাবে। ফলে এতদুভয়ের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়
করা বড়ই কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। তাছাড়া
বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট দা‘ঈরা এবং তাবীয ব্যবসায়ীরা এটিকে সুযোগ হিসাবে গ্রহণ করবে।
৪.
কুরআনকে তাবীয হিসাবে ব্যবহার করলে কুরআনের অবমাননা করা হয়। ব্যবহারকারী এই তাবীয নিয়ে টয়লেট, নাপাক
স্থান ইত্যাদিতে গিয়ে থাকে, যেসব স্থানে
কুরআন নিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। আর
ব্যবহারকারী যদি বাচ্চা হয়,
তাহলে তো কথাই নেই।
দ্বিতীয় মত: তাবীয যদি কুরআন থেকে হয়, তাহলে তা ব্যবহার করা বৈধ। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা, আবূ জা‘ফর মুহাম্মাদ ইবনে আলী প্রমুখ থেকে এই মতটি উল্লেখ করা হয়। নিম্নোক্ত হাদীছটি তাঁদের দলীল: রাসূল
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে
ব্যক্তি কোনো কিছু ঝুলাবে,
তাকে তার দিকে ঠেলে দেওয়া হবে’[5]।
তাঁরা বলেন, উক্ত হাদীছের বক্তব্য অনুযায়ী
স্পষ্ট বুঝা যায়,
যে ব্যক্তি শিরকী তাবীয
ঝুলাবে, তাকে সেদিকে ঠেলে দেওয়া হবে। কিন্তু
কেউ কুরআন ঝুলালে স্বয়ং আল্লাহ তার দায়িত্ব নিবেন; তাকে তিনি ছাড়া অন্য কোনো কিছুর
দিকে ঠেলে দিবেন না। কারণ ইসলামী শরী‘আতে কুরআন দ্বারা আরোগ্য লাভের নির্দেশনা এসেছে।
তাঁদের এই উপলব্ধির জবাবে বলা যায়, ইসলামী
শরী‘আতে কুরআন দ্বারা আরোগ্য লাভের নির্দেশনা যেমন এসেছে, তেমনি
কুরআন দ্বারা আরোগ্য লাভের পদ্ধতিও বলে দেওয়া হয়েছে। আর তা হচ্ছে,
কুরআন তেলাওয়াত, গবেষণা, কুরআনকে
জীবন বিধান হিসাবে গ্রহণ এবং শরী‘আত
অনুমোদিত ঝাড়-ফুঁক। সুতরাং কেউ যদি সত্যিকার অর্থে
কুরআন তেলাওয়াত করে,
কুরআনের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করে, কুরআনের অনুসরণ
করে এবং এর বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করে,
তাহলে সে সুস্থতা, নিরাপত্তা এবং শান্তি অর্জন করবেই; যা কুরআন
ঝুলিয়ে অর্জন করা আদৌ সম্ভব নয়।
তাছাড়া কুরআন ঝুলালে যদি আল্লাহ দায়িত্ব নিয়ে নিতেন, তাহলে
কুরআন তেলাওয়াতের প্রয়োজন পড়ত না; প্রয়োজন পড়ত না কুরআন ও ছহীহ হাদীছে উল্লেখিত যিক্র-আযকার ও
দু‘আ পড়ার। ফলে
এতোসব যিক্র-আযকার ও দু‘আ এবং শরী‘আত সম্মত
ঝাড়-ফুঁক অনর্থক হয়ে যেত।
আরেকটি বাস্তব বিষয় হচ্ছে, যখন কেউ কুরআনের আয়াতকে তাবীয
বানিয়ে ঝুলায়, তখন তার মনটা আল্লাহ থেকে দূরে সরে ঐ তাবীযের দিকে ঝুঁকে পড়ে। সেজন্য দেখা যায়, তার কাছ থেকে ঐ তাবীয খুলে নিলেই
সে বালা-মুছীবত ও বিপদাপদের ভয় পায়। অথচ
আল্লাহ্র উপর পূর্ণ ভরসা করলে কারো মনে কখনও এমন অবস্থার উদ্রেক হবে না।
উপরিউক্ত সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা শেষে বলা যায়, প্রথমোক্ত
মতটিই গ্রহণযোগ্য মত। কারণ এমতের পক্ষের
দলীলগুলি অত্যন্ত স্পষ্ট এবং শক্তিশালী। তদুপরি
এমতের মাধ্যমে আল্লাহ্র একত্ববাদকে নির্ভেজাল ও কলুষমুক্ত রাখা সম্ভব হয়।
কুরআন দিয়ে তাবীয বানানো প্রসঙ্গে কয়েক জন আলেমের বক্তব্য:
·
শায়খ
সুলায়মান ইবনে আব্দুল ওয়াহ্হাব
(রহেমাহুল্লাহ) কুরআন দিয়ে তাবীয বানানো প্রসঙ্গে ছাহাবায়ে কেরাম (রাযিয়াল্লাহু
আনহুম) এবং তৎপরবর্তী যুগের কতিপয় উলামায়ে কেরামের মধ্যকার মতভেদ উল্লেখ করার পর
বলেন, ‘এই যদি হয় পবিত্র কুরআন এবং আল্লাহ্র নাম ও গুণাবলী ঝুলানো নিয়ে উলামায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ, তাহলে তাঁদের পরে শয়তানদের নাম নিয়ে ঝাড়-ফুঁক করা, তাদের
নাম ঝুলানো, তাদের উপর নির্ভরশীল হওয়া, তাদের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা, তাদের নামে যবেহ করা, তাদের কাছে অকল্যাণ
দূরীকরণ এবং কল্যাণ সাধনের প্রার্থনা করার মত যেসব স্পষ্ট শির্কের জন্ম হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে আপনার ধারণা কি?![6]’
·
শায়খ হাফেয হাকামী রহ. ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু
আনহুম) এবং তৎপরবর্তী যুগের কতিপয় উলামায়ে কেরামের মধ্যকার মতভেদ উল্লেখ করে
বলেন, ‘বিশেষ করে আমাদের এই যামানায় নিষিদ্ধ আক্বীদার দুয়ার বন্ধ
করার মহান উদ্দেশ্যে এই প্রকারের তাবীযও যে নিষিদ্ধ হিসাবে গণ্য হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কেননা পাহাড় সদৃশ মযবূত ঈমানে বলিষ্ঠ বেশীর ভাগ ছাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেঈন
যেহেতু সেই সোনার যুগে কুরআন দিয়ে তৈরী তাবীয ঝুলানোকে অপছন্দ করেছেন, সেহেতু এই ফেৎনার যুগে তা অপছন্দ করা অধিক যুক্তিসঙ্গত এবং
বাঞ্ছনীয়। আজ তাবীয ব্যবসায়ীরা মতভেদের এই সুযোগকে
দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে এটিকে স্পষ্ট হারামে পরিণত করছে। তারা তাবীযে কুরআনের আয়াত ও সূরা লিখে তার নীচে জাদুমন্ত্রের অদ্ভুত সব দাগ টানে এবং নানা ধরনের সংখ্যা লিখে। আল্লাহ্র উপর
ভরসা করা থেকে মানুষের অন্তরকে ফিরিয়ে এনে তারা তাদের লিখিত জাদুমন্ত্রের দিকে
তাদেরকে ঠেলে দেয়।…কিন্তু তাবীয যদি কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ দিয়ে না হয়, তাহলে তা ঝুলানো নিঃসন্দেহে শির্ক। কেননা
তাবীয যেমন বালা-মুছীবত দূরীকরণের বৈধ কোনো মাধ্যম নয়, তেমনি তা কোনো ওষুধ হিসাবেও গণ্য নয়[7]।
·
শায়খ
উছায়মীন কুরআনের আয়াত দিয়ে তৈরীকৃত তাবীয সম্পর্কে উলামায়ে কেরামের মতভেদ উল্লেখ
করার পর বলেন,
তাবীয কুরআন দিয়ে তৈরী হলেও তা ঝুলানো বৈধ নয়। অনুরূপভাবে তা কোনো রোগীর বালিশের নীচে রাখা অথবা দেওয়াল বা
অন্য কিছুতে ঝুলানোও বৈধ নয়[8]।
দ্বিতীয় অংশ পড়ুন এখানে
দ্বিতীয় অংশ পড়ুন এখানে
[1] (মুস্তাদরাক হাকেম, তিনি হাদীছটিকে ‘ছহীহুল ইসনাদ’ বলেছেন এবং যাহাবী তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। আলবানী ‘সিলসিলা ছহীহাহ’তে হাদীছটি নিয়ে এসেছেন, হা/৩৩১)।
[2] (মুসনাদে আহমাদ, ১৫৬/৪; সিলসিলাহ ছহীহাহ, হা/৪৯২)।
[3] মুস্তাদরাক হাকেম, তিনি হাদীছটিকে ‘ছহীহুল ইসনাদ’ বলেছেন এবং যাহাবী তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। আলবানী ‘সিলসিলা ছহীহাহ’ তে হাদীছটি উল্লেখ করেছেন, (হা/৩৩১)
[4] আলবানী, ছহীহুত-তারগীব ওয়াত-তারহীব, (হা/৩৪৫৬)।
[5] তিরমিযী, (হা/২০৭২; আহমাদ, ৪/৩১০; গায়াতুল মারাম, (হা/২৯৭)।
[6] তাইসীরুল আযীযিল হামীদ, পৃ: ১৩৬-১৩৮)
[7] (মা‘আরেজুল ক্ববূল, ২/৫১০-৫১২)।
[8] (আল-মাজমূ আছ-ছামীন, ১/৫৮)।