পাঠক! বাংলা ভাষায় সুবৃহৎ বিশুদ্ধ ইসলামী সাইটে আপনাকে স্বাগতম। সহীহ কুরআন, সুন্নাহনির্ভর রেফারেন্স ও গবেষণাধর্মী প্রায় ২০০এর অধিক বিষয়ের অনন্য সমাহার। আমাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও অনুদান দিয়ে সাহায্য করতে পড়ুন এখানে

স্ত্রীর কাছে পরাজিত হতে পারা!

কুরআন ও হাদীসের ভাষ্যে নারীর কাছে পুরুষের পরাজয়!
রাসূল সা. বিদায় হজ্বে বলেন, পুরুষের কাছে নারীদের কিছু অধিকার আছে-
১. তোমরা নারীদের ভরণপোষণ প্রদানে উত্তম উপায় অবলম্বন কর।
২. তোমরা নারীদের যাবতীয় জামা-কাপড় দেয়ার ব্যাপারে উত্তম আচরণ কর।
৩. তোমরা নারীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার কর, কারণ তারা তোমাদের কাছে বন্দি।
(সুনানে তিরমিযি :হাদিস ১১৬৩)
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘‘তোমরা নারীদের সঙ্গে উত্তম আচরণ কর।’’  তাফসীরমতে, উত্তম আচরণের অর্থ হল, শুধু নারীকে কষ্ট দেয়া বা তাকে জুলম করা থেকে বিরত থাকা নয়; বরং নারীর কাছ থেকে যে কষ্ট আসবে সেগুলোও সহ্য করা। রাসূল সা. বলেন, তোমরা নারীদেরকে সম্মান কর। আর নারীদেরকে একমাত্র ইতররাই অসম্মান করে। নারীদের সঙ্গে ভদ্র ও সভ্যরা পরাজিত হয় এবং ইতর ও অসভ্য পুরুষেরা নারীদের সঙ্গে জয়ী হয়। রাসূল সা. বলেন, আমি সভ্য হতে চাই এবং নারীদের কাছে হেরে যেতে চাই; অসভ্য হতে চাই না এবং নারীদের সঙ্গে জিততে চাই না। (তারিখে ইবনে আসাকির : খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৮২)

চলুন এবার একটা চমৎকার গল্প শোনা যাক-
হিজরতের পরের কথা। আল্লাহর নবী সা. মদীনায়। তিনি বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তাঁর কামরায় (রুমে)। পাশেই শুয়ে আছেন হযরত আয়েশা রা.। আকাশে শা‘বানের পূর্ণিস্নাত চাঁদ। আল্লাহর নবী আস্তে আস্তে বিছানা ছেড়ে উঠলেন। গা থেকে চাদর সরালেন। নিঃশন্দে দরজা খুললেন। তাপর ধীরপায়ে জান্নাতুল বাকী’র দিকে বেরিয়ে গেলেন।
হযরত আয়েশা রা. এ ঘটনা বর্ণনাকালে আল্লাহর রাসূলের প্রতিটি পদক্ষেপ ও নড়াচড়ার ক্ষেত্রে—رويدا শব্দ ব্যবহার করেছেন। যার অর্থ হলো—ধীরে ধীরে, আস্তে আস্তে। ভাবুন তো, তখন আল্লাহর নবী সা. প্রতিটি কাজ ধীরে ধীরে করার ব্যাপারে এতো গুরুত্ব দিলেন কেন? পৃথিবীর মানুষ শুনবে কি এ-প্রশ্নের উত্তর? সেই মানুষরা, যারা স্বামীদের মনে করে বাদশা-নওয়াব আর স্ত্রীদের ভাবে দাসী-বাদী?

এই গুরুত্বের কারণ ছিলো শুধু একটি। পাশে শায়িতা হযরত আয়েশা রা. এর ঘুম ও আরামে যাতে বিনা কারণে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়!
আল্লাহু আকবার!
খুঁজে পাওয়া যাবে কি নরম মেজাজ স্বামীদের এমন কাউকে যারা জীবন সঙ্গীনীর আরাম ও বিশ্রামের প্রতি এই পরিমাণ লক্ষ্য রাখে!
এই মাপকাঠিতে যিনি নিজের দাম্পত্য জীবন, তিনি ছাড়া আর কে পারেন জগৎবাসীকে এই কালজয়ী ঘোষণা শোনাতে?
‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি তো সেই, যে পরিবার পরিজনের দৃষ্টিতে সর্বোত্তম।’—তিরমিযী, ইবনে মাজা।
অথবা একই কথা অন্য হাদীসে  ভিন্ন শব্দে
خيركم خيركم لأهله, و أنا خيركم  لأهلي
‘‘তোমাদের মধ্যে ‍উত্তম তো তারাই, যারা স্ত্রীদের কাছে উত্তম।’’-ইবনে মাজা

প্রিয় পাঠক, আসুন আপন স্ত্রীদের সাথে ভালো ব্যবহার করি। সুন্দর ব্যবহারে তাকে আকৃষ্ট করি। ভালোবেসে দুটো কথা বলি। তার প্রতি সকল ঋণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাই। আল্লাহ সুব. আমাদের তৌফিক দিন।

এ ধরণের আরো পোস্ট পড়ুনঃ

প্রিয় প্রেয়সী বধু! (বিবাহিতদের জন্য অসাধারণ একটি গল্প)

ইসলামই নারীদের সর্বোচ্চ অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছে


ছবিটি জুম করে দেখুন