পাঠক! বাংলা ভাষায় সুবৃহৎ বিশুদ্ধ ইসলামী সাইটে আপনাকে স্বাগতম। সহীহ কুরআন, সুন্নাহনির্ভর রেফারেন্স ও গবেষণাধর্মী প্রায় ২০০এর অধিক বিষয়ের অনন্য সমাহার। আমাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও অনুদান দিয়ে সাহায্য করতে পড়ুন এখানে

আশুরা ও মুহাররম সম্পর্কে প্রচলিত জাল কথা-কাহিনী

মুহাররম মাস ইসলামে বা শরয়ী দৃষ্টিকোণে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। হাদীসে এসেছে, ‘এটি আল্লাহর মাস।’ কিন্তু এ মাসকে কেন্দ্র করে অনেকেই বাড়াবাড়ি করে থাকেন।
বিশেষ করে, অজ্ঞতাবশত ফজিলত বর্ণনা, কিংবা উদযাপনের ক্ষেত্রেও বাড়াবাড়ি করে থাকেন। ইসলাম বহির্ভূত ‘শিয়া’দের কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে উল্লেখ্য। আপাতত, এই পোস্টে উদ্দেশ্য হলো, এ দিন বা মাসকে কেন্দ্র করে সমাজে প্রচলিত যেসব বানানো ও জাল কথা-কাহিনী চালু আছে সেসব তুলে ধরা।
নিচের কথাগুলো মুসলিম নামধারী একশ্রেণি মিথ্যুকদের। যা প্রচার প্রসার করা গুনাহের কাজ। এ সম্পর্কে সচেতন থাকা, অন্যকে বলা ও শোনা থেকে বিরত থাকা একান্ত জরুরী। এমনই মিথ্যাচারিতার মধ্যে রয়েছেঃ
১) এই দিনে আল্লাহ পাক পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন।
২) এই দিনে আকাশ থেকে সর্বপ্রথম বৃষ্টি হয়েছে।
৩) এই দিনে হযরত আদম (আঃ) এর তাওবা আল্লাহ পাক কবুল করেছেন।
৪) এই দিনে হযরত ইদ্রীস (আঃ) কে আকাশে উথিত করেছেন।
৫) এই দিনে হযরত নুহ (আঃ) ও তার সাথীদের নাজাত দান করেছেন।
৬) এই দিনে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে আগুন থেকে মুক্তি দান করেছেন।
৭) এই দিনে হযরত মুসা (আঃ) এর সাথে আল্লাহ পাক কথা বলেছেন এবং তাওরাত কিতাব নাযিল করেছেন।
৮) এইদিনে হযরত আয়ুব (আঃ) কে রোগ মুক্ত করেছেন।
৯) এই দিনে হযরত ইউসুফ (আঃ) কে ফিরিয়ে এনেছেন হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর কাছে।
১০) এই দিনে হযরত ইউনুস (আঃ) কে মাছের পেঠ থেকে উদ্বার করেছেন।
১১) এই দিনে হযরত সুলাইমান (আঃ) কে সম্রাজ্য ফিরিয়ে দিয়েছেন।
১২) এই দিনে হযরত ইসা (আঃ) কে আকাশে উথিত করেছেন।
১৩) এই দিনে সর্ব শেষ কিয়ামত হবে।
উপরের সব কথাই মিথ্যা।

এদিনের ব্যাপারে যা বিশুদ্ধভাবে এসেছে তা হচ্ছেঃ


১) এ দিনে আল্লাহ তা'আলা মূসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর উম্মাতকে ফির'আউনের হাত থেকে নাজাত দিয়েছেন। তাদেরকে সমুদ্র পার করিয়েছেন।
২) মূসা আলাইহিস সালাম রোজা রেখেছেন।
৩) আমাদের রাসূল সা. এ দিন রোজা রেখেছেন। এবং সাহাবীগণকে রোজা রাখতে বলেছেন
কিন্তু রমযানের রোজা ফরয হওয়ার পরে তা নফল রোজা হয়ে যায়।


মুহররমের ফজিলতের ব্যাপারে যতসব মিথ্যা ফজিলত


১) এই দিনে যে রোজা রাখলো সে যেন সারা বছর রোজা রাখলো।
২) এই দিনে যে বেক্তি গোসল করবে মৃত্যু ছাড়া অন্যান্য অসুখ থেকে আল্লাহ পাক নিরাপদ রাখবেন।
৩) এই দিনে যে ব্যক্তি বস্ত্রহীনকে বস্ত্র পরালো, তাকে আল্লাহ পাক দোযখের আযাব থেকে মুক্তি দান করবেন।
৪) এই দিনে যে ব্যক্তি রোগীর সেবা শুশ্রুষা করলো, আল্লাহ পাক তাকে বিনিময়ে সৌভাগ্যশীল করবেন।
৫) এই দিনে যে ব্যক্তি কোন ইয়াতিমের মাথায় হাত বুলাবে বা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করবে বা পিপাসার্তকে পানি পান করাবে আল্লাহ পাক তাকে পরিতৃপ্ত করাবেন এবং সালসাবিল নহরের পানি দ্বারা তার পিপাসা নিবারণ করবেন।
৬) এই দিনে যে ব্যক্তি স্বীয় পরিবার-পরিজনের জন্য পরিতৃপ্তির ব্যবস্থা করবে, আল্লাহ পাক সারা বছর তার রিযিক প্রশস্ত করবেন।

মহররমের ফযীলতের ব্যাপারে বিশুদ্ধ বর্ণনাঃ


১) এদিন সাওম বা রোযা রাখলে আশা করা যায় আল্লাহ তা'আলা তার বিনিময়ে পূর্ববর্তী এক বছরের (ছোট) গুনাহ ক্ষমা করবেন।

উল্লেখ্য যে, কারবালায় ইমাম হুসাইনের শাহাদাতের ঘটনাটি বেদনাদায়ক। কিন্তু এর সাথে আশুরার দিবসে শোক পালনের কোনো সম্পর্কে নেই।।
আল্লাহ সুব. যেন আমাদেরকে আশুরা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে তা যথাযথ পালন করার তৌফিক দান করেন! আমিন।


আরো পড়ুনঃ ইতিহাসে আশুরা বা দশই মুহাররম

একটি আবেদন

বাংলা ভাষায় একটি শক্তিশালী ও মানসম্মত রেডিও প্রতিষ্ঠার প্ল্যান নিয়ে সালাম মিডিয়া কাজ করছে। আপনি একাজানি। আমরাও একানিজ নিজ জায়গা আমরা সবাই একা; কিন্তু সবাই মিলেও কী একা?
আমাদের রয়েছে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবলশুধু নেই প্রয়োজনীয় অর্থবল। তাই আপনি যদি একজন সচ্ছল মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে আপনার প্রতি আমাদের ছোট্ট আহ্বান। বিস্তারিত পড়ুনঃ  আমাদের কথা

ছবিটি জুম করে দেখুন