পাঠক! বাংলা ভাষায় সুবৃহৎ বিশুদ্ধ ইসলামী সাইটে আপনাকে স্বাগতম। সহীহ কুরআন, সুন্নাহনির্ভর রেফারেন্স ও গবেষণাধর্মী প্রায় ২০০এর অধিক বিষয়ের অনন্য সমাহার। আমাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও অনুদান দিয়ে সাহায্য করতে পড়ুন এখানে

আসুন জেনে নিই: নাস্তিক্যবাদ কি নতুন কিছু না আগেও ছিল এবং কুরআন অবিশ্বাসীদের মন্তব্য কেমন ছিল

নাস্তিকতা বিষয়টি নতুন কোন বিষয় নয়, মানব জাতির ধর্মীয় অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সুদূর প্রাচীন কাল থেকেই একদল মানুষ আল্লাহকে "রব" হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে তারা প্রকৃতিবাদী হয়েছে। হুদ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জাতির মধ্যে এই জাতীয় চিন্তা-ভাবনা বিরাজমান ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। জীবন ও জগত সম্পর্কে তাদের ধারণার বহিঃপ্রকাশ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, তারা বলতোঃ


“(তারা বলে, কিসের আবার পুনরুত্থান) দুনিয়ার জীবনইতো হচ্ছে আমাদের একমাত্র জীবন,
আমরা (এখানে) মরবো, (এখানেই) বাঁচবো, আমাদের কখনই পুনরুত্থিত করা হবে না"। (সূলা আল-মুমিনূন : ৩৭)

বর্তমানে সময়ে বিশ্বে এদের উত্তরসূরীদের অভাব নেই। কিন্ত জ্ঞানের এ অভিনব অগ্রগতির যুগে একদল চিন্তাশীল মানুষ যেমন আল্লাহকেই তাদের 'রব' বলে স্বীকার করে নিচ্ছে, তেমনি আরেকদল মানুষ আল্লাহকেই অস্বীকার করে বলেছে- আল্লাহ বলতে কিছুই নেই। এ জগত মহা বিস্ফোরণের ফল। আল্লাহ বলতে কেউ এসব সৃষ্টি করেনি; বরং মানুষই আল্লাহকে সৃষ্টি করেছে।

পূর্বের কুরআন অবিশ্বাসীরা কুরআন সম্পর্কে যা বলতো:
“আমরা চাইলে এধরণের কথাতো নিজেরাও বলতে পারি, এগুলো তো আগের লোকদের উপকথা ছাড়া আর কিছুই নয়”। (সূরা আল আনফাল : ৩১)
বর্তমান সময়ে নাস্তিকরা এই কথাগুলোই বলে থাকে। 

নবীরা যখন অবিশ্বাসীদের এক আল্লাহর দিকে ডাকতো তখন তার জবাবে তারা বলতো:
“আমরা তো দেখছি যে, তুমি সুস্পষ্ট গুমরাহীতে লিপ্ত রয়েছ” (সূরা আল আ’রাফ: ৬০)
“আমরা তো তোমাকে নির্বুদ্ধিতায় লিপ্ত মনে করি” (সূরা আল আ’রাফ: ৬৭)
“তোমরা যা মেনে নিয়েছ আমরা তা অস্বীকার করি, অমান্য করি” (সূরা আল আ’রাফ: ৭৬)
কেউ যদি বর্তমানে কোন নাস্তিককে আল্লাহর দাসত্ব কবুল করে নেওয়ার কথা বলে তখন তারা এই কথাগুলোই বলে থাকে যেমন: তোমরা বোকা, তোমরা যা মান আমরা তার অস্বীকার করি।

হঠকারিতা বক্তব্য হিসেবে তারা যা বলতো:
“আচ্ছা, তাহলে নিয়ে আস সেই আযাব, যার তুমি আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছ”। (সূরা আল আরাফ: ৭০)
আযাবের ভয় দেখালে বর্তমান সময়ের নাস্তিকরা বলে থাকে, আযাব যদি সত্যিই থাকতো তাহলে তা আমাদের পাকড়াও করে না কেন?

যারা আল্লাহতে বিশ্বাসী তাদের বিরুদ্ধে তারা যা বলতো:
“এই লোকদিগকে তো এদের দ্বীন (ধর্ম) ধোকার কবলে নিক্ষিপ্ত করেছে”(সূরা আল আনফাল: ৪৯)
আল্লাহতে বিশ্বাসীদের এরা বোকা এবং ধোকার কবলে নিক্ষিপ্ত রয়েছে বলে একই মন্তব্য করে যাচ্ছে।

শুধু পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু অবিশ্বাসী উত্তরসুরীদের কথাগুলো একই রয়ে গেছে। যেমন: ফিরাউন সুউচ্চ প্রাসাদ বানিয়ে তাতে আরোহন করে মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেছিল, কই তোমার আল্লাহ, তাকে তো খুজে পেলাম না, ঠিক একই কথা বলেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন স্পুটনিক নিক্ষেপ করার পর, তারা বলেছিল, কই তোমাদের আল্লাহ, তাকে তো খুজে পেলাম না। 
এখন দেখুন তো এই দুই শক্তির কোনটি টিকে আছে? 

পুনশ্চঃঅসাধারণ এই গবেষণামূলক প্রবন্ধটি লিখেছেন ভাই উমর। 
এজন্য তাঁকে অসংখ্য মোবারকবাদ। আল্লাহ তাঁকে জাঝায়ে খাইর দান করুক। আমীন।